Shares 2

বাইক রাইডিং করার শীর্ষ ১০ টি কৌশল । জানুন বিস্তারিত

Last updated on 11-Jan-2025 , By Ashik Mahmud Bangla

বর্তমান যুগে বাইক রাইডিং একটি আধুনিক ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে এবং কিছু মানুষের কাছে এটা নেশার মত । কিন্তু  আমরা সকলেই জানি যে বাইক রাইডিং অনেক ঝুঁকি রয়েছে এবং প্রতিদিন অন্তত একজন মানুষ বাইক রাইডিং করতে গিয়ে আহত হয়, অনেকে মারা পর্যন্ত যায়।


বাইক রাইডিং করার শীর্ষ ১০ টি কৌশল । জানুন বিস্তারিত


তাই আমরা এ ক্ষেত্রে যদি বাইক রাইডিং কিছু কৌশল অনুসরন করি তাহলে আমরা হয়ত আমাদের আয়ু কিছুদিন বাড়াতে পারব,মোটের উপর কে একটি  মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যেতে চায়।

এখানে বাইক রাইডিং সময় আপনার নিরাপত্তার জন্য কিছু কৌশল দেয়া হলঃ

বাইক রাইডিং

Also Read: বিশ্বের সবচাইতে দ্রুতগতির ১০ টি সুপারবাইক সম্পর্কে জানবো !

হেলমেটঃ

আমরা সবাই জানি প্রত্যেক মোটরসাইকেলেই একটি হেলমেট থাকে । হেলমেট আমাদের মাথাকে যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা হতে রক্ষা করে । মোটরসাইকেল দ্বারা সংঘটিত অধিকাংশ মৃত্যুই হয় মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে । যখন আপনি হেলমেট কিনবেন নিশ্চিত হন এটা আপনার উপযুক্ত এবং এটা আপনার মাথার সাথে যথাযথ ভাবে ফিট হবে। 

যে কারণে আপনি রাস্তায় পরিস্কার দেখতে পারবেন এবং চেষ্টা করুন সম্পূর্ণ মাথা আবৃত করে এরূপ হেলমেট কিনতে কারণ এটা আপনাকে ১০০% নিরাপত্তা দেবে। এটা আপনার সম্পূর্ণ মাথা রক্ষা করবে ।শুধুমাত্র সুন্দর দেখেই হেলমেটের দিকে আকর্ষিত হবেন না কারণ দেখতে ভালো হতে পারে কিন্তু আপনাকে দুর্ঘটনার সময় বাঁচাতে পারবে না । 

Also Read: ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট এর মোটরসাইকেল রাইডিং - এশিয়ান গেমস ২০১৮

নিশ্চিত হন যে আপনার হেলমেট খুবই টাইট বা খুবই ঢিলেঢালা নয় কারণ উভয়ই বিপদজনক ।সুতরাং আপনি আপনার জন্য সঠিক হেলমেটটি ক্রয় করবেন ।

বাইক রাইডিং

Also Read: Mission Teknaf to Tetulia in 24 Hours: A Pioneering Motorcycle Journey in Bangladesh

মনোযোগঃ

বাইক চালানোর সময় চালকের চোখ কান অবশ্যই খোলা থাকবে এর ফলে সে পরিষ্কার দেখতে পারবে যে তার রাস্তায় কোন গাড়ি আসছে কিনা এবং তার পিছন থেকে কোন গাড়ি আসছে কিনা কারণ দুটি বাইকের চালকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ।আমরা অবশ্যই উঁচু শব্দের ইঞ্জিন ব্যবহার করবো, এটা আমদের নিরাপত্তার জন্যই যার ফলে অন্য বাইক চালকেরা  আমাদের খেয়াল করবে যে আমরা অন্যদিক থেকে আসছি । 

যখন আপনি লাইন পরিবর্তন করবেন সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য ডানে ও বামে দু বার তাকাবেন । মোটরসাইকেলের সাথে কারের দুর্ঘটনা ঘটার হার বেশী তাই ব্যস্ত সময়ে গাড়ি চালানোর সময় আপনাকে অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে । রাস্তায়  চলমান গাড়ির দিকে এক সেকেন্ড বেশী তাকালেও একজনের জীবন বাচতে পারে তাই আমাদের এটাকে গুরুত্ব দেয়া উচিত।

যাত্রীঃ

একজন লোককে একা বাইক চালাতে দেখা খুবই বিরল ঘটনা,তার পেছনে কেউ না কেউ থাকেই ।তাই এ ক্ষেত্রে যিনি যাত্রী হিসেবে থাকবেন তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন । যখন আপনি পেছনে কাউকে বহন করবেন নিশ্চিত হোন যে সে সঠিকভাবে ধরেছে । 

তার অবস্থান অবশ্যই সঠিক হতে হবে এসময় সে শক্ত জুতা ও নিরাপত্তামূলক কাপড় পড়তে পারে । কিন্তু মোটরসাইকেলে যাত্রী বহনের আগে আপনাকে অবশ্যই আগে এর সাথে অভ্যস্ত হতে হবে । এটা একই সাথে আপনি ও যাত্রী উভয়কেই আরাম দেবে । 

এটা নিশ্চিত হোন আপনার যাত্রী আপনাকে মাঝপথে বিরক্ত করবে না ।যদি আপনি আপনার পিছনে একটি শিশুকে বহন করতে চান তবে আপনার দেশের নিয়মনীতি মেনে চলুন ।

rainy-day-ride

আবহাওয়াঃ 

খারাপ আবহাওয়াতে কখনো বাইক চালাবেন না ,ভারী বৃষ্টিতে এটা ঝুঁকিপূর্ণ কারণ যখন বৃষ্টির ফোটা মাটিতে পড়ে এটা রাস্তাকে পিছলা করে দেয় । অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কখনো খারাপ আবহাওয়ায় বাইক চালাবেন না এবং চালালেও অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করবেন । 

পিছলা রাস্তায় অবশ্যই ধীরে ধীরে বাইক চালাবেন এবং বাইক থামানোর জন্য যথেষ্ট জায়গা রাখবেন । সবচেয়ে বড় ভুল যেটা বাইক চালকেরা করে থাকেন সেটা হল তারা যথেষ্ট পরিমাণ ফাঁকা জায়গা রাখেন না ।

 প্রযুক্তিঃ

নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে অ্যান্টি লক ব্রেক তৈরী হয়েছে কিন্তু এখনও অনেক বাইক ও বাইক চালকের কাছে এটা নতুন ।এটা না থাকার কারণে তারা দ্রুত ব্রেক করতে পারেনা যা অন্য গাড়ির চালকেরা পারে । যদি তাদের চাকা লক হয়ে যায় তবে তারা তাদের বাইকের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে দুর্ঘটনা ঘটে ।এটা এড়ানোর জন্য একজন বাইকারকে ন্যূনতম দূরত্বে বাইক থামানোর অনুশীলন করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় পর যখন সে দক্ষ হবে তখন সে অবশ্যই এটা রাস্তায় প্রয়োগ করবে ।

হেডফোন পরিহার করুন

 হেডফোন পরিহার করুনঃ

সম্পূর্ণ মনোযোগ ড্রাইভিং এর দিকে রাখা একটি অবশ্য পালনীয় নীতি । যেকোনো প্রকার অমনোযোগিতায় বাইক চালকের জন্য ক্ষতিকর এবং তা দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে । বাইক চালানোর সময় কোন কিছু চিন্তা করা খুবই খারাপ । আপনার এম.পি থ্রি  প্লেয়ারে গান শোনা কিংবা কারো সাথে ফোনে কথা বলা ড্রাইভিং হতে আপনার মনোযোগ সরিয়ে ফেলে তাই আপনার এগুলো পরিহার করা উচিত । অমনোযোগিতার ফলাফল হিসেবে আপনার হাতের উপর  থেকে বাইকের নিয়ন্ত্রণ কমে যায় । শুধুমাত্র স্টিয়ারিং থেকে নয় একই সাথে ব্রেকিং, গতিবৃদ্ধি ও গিয়ার পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও । এটি নিঃসন্দেহে একটি বাজে আইডিয়া ।

 দক্ষতাঃ

মোটরসাইকেল চালানো আপনার ড্রাইভিং দক্ষতা দেখানোর চেয়ে কম কিছু নয়। প্রত্যেক বাইক চালকেরই নিজস্ব কিছু দক্ষতা থাকে এবং শুরু থেকে দক্ষ হওয়া পর্যন্ত নিজের দক্ষতাগুলো অনুসরন করা উচিত । এটা নিশ্চিত হন যে রাস্তায় আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী বাইক চালাচ্ছেন এবং আপনার বন্ধুর দক্ষতা নিয়ে ভাববেন না কারণ তার দক্ষতা আপনার থেকে ভিন্ন । তাই তার দক্ষতা অনুসরন করা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয় ।আপনি যদি রেসার হতে চান সেক্ষেত্রে রেসিং স্কুলে ভর্তি হতে পারেন যেখানে আপনি অনেক মজা পাবেন এবং অনেক নতুন কৌশল শিখতে পারবেন ।

বাহ্যিক গঠনঃ

পোশাক একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আপনার পায়ের জন্য সঠিক জুতা পরা অপরিহার্য ।বাইকের গিয়ার আপনার পায়ের সাহায্যে পাল্টাতে হবে তাই আঙ্গুল খোলা থাকলে সেগুলো ব্যাথা হয়ে যেতে পারে ।যখন আপনি বাইক চালাবেন ইঞ্জিনের তাপের কারণেও আপনার পা পুড়ে যেতে পারে। বাইক চালানোর সময় শক্ত জুতা আবশ্যক কারণ নরম জুতার সোল পিছলে যেতে পারে । লেদারের জুতা নিরাপত্তার জন্য ভালো এবং এগুলোর হিলও নিচু ।এটা আপনাকে ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করবে ।

রাইডিং জ্যাকেট

একজন বাইক চালকের পোশাকঃ

ছোট ও ঢিলেঢালা কাপড় পড়া ভালো আইডিয়া নয় কারণ এগুলো নিরাপদ নয় । এগুলো একই সাথে পিছলানোর সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয় । একারনেই লেদারের কাপড় সবার জন্য নিরাপদ । কারণ কেউ যদি বাইক হতে রাস্তায় পড়েও যায় এটা তাকে রক্ষা করবে । আপনি যদি ৬০ কি.মি গতিতে বাইক চালান একটি ছোট পাথরও আপনার জন্য বিপদজনক হতে পারে । নিরাপত্তার জন্য আপনি যা করতে পারেন তা হল একটি ছিদ্রযুক্ত জ্যাকেট যা একই সাথে আপনাকে নিরাপদ ও ঠাণ্ডা রাখবে ।

আইন সম্পর্কে জানুনঃ

বাইক চালকদের নিরাপত্তার জন্য সর্বশেষ পরামর্শ হল নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন কোর্স করা । মোটরসাইকেলের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আপনাকে একটি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে এবং এ পরীক্ষায় পাস করতে হবে এবং যথাসময়ে আপনাকে একটি নিরাপত্তামূলক কোর্সও করতে হবে । 

Also Read: বিজয় দিবসে রাঙ্গুনিয়া বাইক লাভার্সের দিনব্যাপী কর্মসূচী

এ কোর্সে আপনাকে আপনার দেশের যে সকল আইন মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সেগুলো শেখাবে , জরুরী অবস্থায় কিভাবে সাহায্য চাইবেন তাও শিখাবে এবং একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে আপনার দক্ষতাগুলো প্রমাণের সুযোগ দেয়া হবে ।এছাড়া প্রশিক্ষক আপনাকে মোটরসাইকেল রক্ষণাবেক্ষণের কৌশলও শেখাবেন এবং অনিরাপদ অবস্থা কিভাবে পরিহার করবেন তাও শেখাবেন । 

সবশেষে আপনাকে শিখতে হবে বাইক নিয়ে পিছলে গেলে কিভাবে আত্মরক্ষা করবেন। মোটরসাইকেলের নিরাপত্তামূলক একটি কোর্স আপনাকে বাইক চালানোর যোগ্য করে তুলবে এবং আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে।

সুতরাং সকলেই যদি এই সহজ নিয়মগুলো মেনে চলি  এবং মোটরসাইকেলে নিরাপত্তার শীর্ষ ১০ পরামর্শ গুলো অনুসরন করি তাহলে অনেক জীবন বাচান যাবে এবং অনেক দুর্ঘটনা পরিহার করা সম্ভব হবে ।

Published by Ashik Mahmud Bangla