Shares 2

খাগড়াছড়ি ট্যুর টিম সাওয়ারি - তৃতীয় পর্ব

Last updated on 15-Jul-2024 , By Saleh Bangla

খাগড়াছড়ি পৌছে মনের মতো একটা রিসোর্ট পেয়ে গেলাম।  সংযুক্ত দুটি রুম তিন শয্যা বিশিষ্ঠ। যেখানে আরামেই ৭-৮ জন ঘুমাতে পারবে। আর বাথরুম টাও বিশাল আর আধুনিক সুবিধাযুক্ত। রুমের দরজা খুললেই সামনে সুবিশাল আঙিনা যেখানে আমাদের বাইকগুলো পার্ক করা ছিলো। কোনো হৈ চৈ কিছুই নেই। খাগড়াছড়ি থেকেও মনে হচ্ছিলো যেনো নিজ বাসাতেই আছি। রিসোর্ট টির নাম খাগড়াছড়ি রিসোর্ট।আপনারা ভবিষ্যতে গেলে থাকতে পারেন। আশা করি ভালো লাগবে। রিসোর্টে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে সবাই বের হয়ে পড়লাম আশেপাশে একটু ঘুরে দেখার জন্য।

খাগড়াছড়ি ট্যুর টিম সাওয়ারি - তৃতীয় পর্ব

  

Khagrachari-tour-team-s60599fb64489


এবার বাইক রেখে পায়ে হেটেই বের হলাম। ছোট্ট ছিমছাম শহর খাগড়াছড়ি। কিন্তু শহরটি রাত ১০ টার ভেতর-ই কেমন যেনো ঘুমিয়ে পড়ে। তাই আরো কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে ডিনার করে রিসোর্টে ফিরে আসলাম। এবারের ডিনারের মেনু ছিলো চিকেন বিরিয়ানি। রুমে ফিরেই সবাই আড্ডা,গল্প,মাস্তিতে মেতে উঠলাম। আমাদের সদস্যদের কেউ-ই কোনো নেশায় আসক্ত নয় তাই আমরা কোকাকোলা খেয়েই নেশা করলাম, হাহাহ। 

এর পর সিনিয়র, জুনিয়র ভূলে সবাই নাচা,গাওয়ায় মেতে উঠলাম। আমাদের সেই মজার কিছু অংশ আমরা ভিডিও করেছিলাম যা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে খুব-ই ভাইরাল। গল্প,আড্ডাবাজি করতে করতে কখন যে রাত ৩ টা বেজে গিয়েছিলো কেউ খেয়াল-ই করিনি। আমরা সবাই একমত যে খাগড়াছড়ির ঐ রাত টাই ছিলো সম্পূর্ন ট্যুরের ভেতর সব চেয়ে মজার রাত। অনিচ্ছা সত্ত্বেও আড্ডার পরিসমাপ্তি ঘটাতে হলো কারণ আগামীকাল সকালেই আবার কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে।

সবার ঘুম ভাঙল মোটামুটি ৯ টার পর। এর পর গোসল করে সব গোছগাছ করে বের হতে হতে ১১ টা। আমরা সোজা চালিয়ে চলে আসলাম খাগড়াছড়ির বিখ্যাত আলুটিলা গুহা দেখতে। বাইক পার্ক করে কত যে সিড়ি ভেঙে নামলাম তার হিসেব নেই। গুহার মুখেই দেখি মশাল কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। মশালে আগুন জ্বালিয়ে না ঢুকলে নাকি কিছুই দেখা যায় না। বাহ! ভালোই তো,  গল্পের বইয়ে কত্ত পড়েছি মশাল নিয়ে গুহায় ঢোকার কাহিনী আজ নিজেই সেই ঘটনার স্বাক্ষী হতে চলেছি। গুহাটি আসলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার। কোথাও সোজা হয়ে হাটা যায় কোথাও বা অনেক নিচু হয়ে হাটতে হয়। আর পথ মোটেই সমতল নয়, সম্পূর্ন বন্ধুর পথ।


1669699511288


মশালের আলোয় একেক জনের চেহারা কেমন যেনো অদ্ভুত লাগছিলো। এর ভেতরেই আকাশ আর আতিক অদ্ভুদ চেঁচামেচি শুরু করলো আমরাই বা বাদ যাই কেনো? সবাই চিল্লাপাল্লা শুরু করলাম যে যার মত। কিন্তু আমাদের আরেক সদস্য মেহেদী ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারলোনা। ভয়ে তার পিলে চমকে গেলো।

সে নানা ভাবে অনুনয় করতে থাকে যাতে আমরা এমন না করি।  মনে পড়লে এখনো হাসি পায়।  আর তাছাড়া সে একটু বেশি-ই ভারী তাই অনেক সরু জায়গা থেকে বের হতে তার একটু কষ্ট-ই হচ্ছিলো, যাই হোক বেশিক্ষণ স্থায়ী হলোনা আমাদের এই আদিম প্রকৃতির এডভেঞ্চার। আমরা ১০-১২ মিনিটের ভেতরেই গুহার উলটা পাশ থেকে বের হয়ে আসলাম। কিন্তু সময়টা ভালোই ছিলো। নিজেকে কেমন যেনো আদিম গুহামানব মনে হচ্ছিলো।

এর পর সিড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে সবাই গলদঘর্ম হয়ে গেলাম। সিড়ি বেয়ে নামা কষ্টকর নয় কিন্তু ওঠা আসলেই কষ্টকর। উপরে উঠে কিছুক্ষণ জিড়িয়ে আমরা বেশকিছু ছবি তুললাম।আর এখানে পর্যটকদের সুবিধার জন্য কিছু ওয়াচ টাওয়ার মত আছে যেখানে দাঁড়িয়ে বহুদূর পর্যন্ত পাহাড় গাছপালার অপরুপ সৌন্দর্য দেখা যায়। 

ভোরের দিকে হয়তো আরো ভালোভাবে প্রকৃতি উপভোগ করা যায়। কিন্তু সূর্য তখন আমাদের ঠিক মাথার উপরে তার সম্পূর্ন তাপ নিয়ে যেনো হাজির। তাই আরো কিছুক্ষণ কাটিয়ে আমরা ফিরতি পথ ধরলাম। এখানেই কিভাবে যেনো ১-১.৫ ঘন্টা কেটে গেলো। এবার আমরা খাগড়াছড়ি থেকে রামগড়ের রাবার বাগান হয়ে মোটামুটি দুপুর ৩ টার ভেতর চট্টগ্রাম শহরে পৌছে যাই।

Also Read: কক্সবাজার ট্যুর টিম সাওয়ারি - পঞ্চম পর্ব 

 

1669699529009


শহরে পৌছেই নামায,দুপুরের খাওয়া দাওয়ার জন্য ঘন্টাখানেকের বিরতি নেই। চট্টগ্রাম শহরে আগেও পাচ বার এসেছি কিন্তু শেষবার প্রায় ১০ বছর আগে তাই পথঘাট চেনা ছিলোনা। পথচারী, সি এন জি চালকদের কাছে শুনতে শুনতে কালুরঘাট হয়ে কক্সবাজারের পথ ধরতে ধরতে একটু বেশি-ই সময় ব্যয় হয়ে গেলো। 

এদিকে প্রথম দিকে রাস্তা এত সরু আর ভাঙাচোরা যে চালাতেই কষ্ট হচ্ছিলো। কক্সবাজারের মত এমন একটি আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্রের মহাসড়ক আরো উন্নত হবার কথা ছিলো। রাস্তা শুধু এমন হলেও কথা ছিলো কিন্তু দিনটি ছিলো শুক্রবার,  তাই মড়ার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে রাস্তায় এত-ই যানজট আর যানবাহন ছিলো যে বাইক নিয়ে চলার চেয়ে দাড়িয়েই থাকতে হচ্ছিলো বেশি। 

এদিকে রাত নেমে এসেছে আর পথ তখনো প্রায় পুরোটাই বাকি আর স্পিডো ৩০-৪০ এর বেশি তোলা যাচ্ছেনা, মহাবিপদ। এমনি-ই রাতে কক্সবাজার হাইওয়ে নিরাপদ নয় তার উপর যদি এভাবে চালাতে হয় তবেতো সারারাত লেগে যাবে কক্সবাজার পৌছাতে। সন্ধা ৭:৩০ এর দিকে দেখলাম আমরা তখন কেবল চকড়িয়া বাজারে। যাই হোক একটু সামনে যেতেই ধীরে ধীরে যানজট কমতে থাকল আর রাস্তাও প্রশস্ত হতে শুরু করলো এবং আমরাও মোটামুটি স্পিডে এগোতে থাকলাম।


1669699539596

  

কক্সবাজারের ৪০-৫০ কিলো আগে আমরা অস্বাভাবিক অনেক কিছুই দেখেছি যার সত্যতার প্রমান পরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে পেয়েছি। যাক সেই আলোচনায় আর যাবোনা। অবশেষে আল্লাহর রহমতে নিরাপদেই রাত ১০ টার ভেতর আমরা কক্সবাজার পৌছে যাই,যাক  অবশেষে শেষ হলো আরেকটি ঘটনাবহুল রাইড। কিন্তু কক্সবাজার পৌছেই আমাদের মনে পড়ল যে খাগড়াছড়ির বিখ্যাত সিস্টেম হোটেলের খাবারের স্বাদ তো নেয়া হলোনা। ব্যস্ততার কারনে যা আমরা বেমালুম ভূলে গিয়েছিলাম। পরে মনকে শান্তনা দিলাম, সিস্টেমের ভূড়িভোজ টা নাহয় পরের বারের জন্য তোলা থাক। সব মজা যদি একবারেই করি তাহলে পরের বার কি করবো......(চলবে)  

লিখেছেনঃ মঞ্জুরুল আল হাসান মুন্না

Published by Saleh Bangla

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

I-am Anger

I-am Anger

Price: 0.00

I-am Roma

I-am Roma

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Aima A500

Aima A500

Price: 0.00

Aima A715

Aima A715

Price: 0.00

AIMA Dream Maker

AIMA Dream Maker

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes