হেলমেটের সাইজ মাপার সঠিক নিয়ম
This page was last updated on 17-Sep-2025 10:07pm , By Rafi Kabir
আমরা সবাই জানি, হেলমেট হলো একজন রাইডারের সবচেয়ে বড় সেফটি গিয়ার। কিন্তু হেলমেট যদি মাথায় ঠিকমতো না ফিট করে, তাহলে সেটা কেবল showoff হয়ে যায়! অনেকেই ভুল সাইজের হেলমেট পরে রাস্তায় বের হয় ফলাফল? দুর্ঘটনায় হেলমেট থাকার পরও মাথা সেভ হয়নি। তাই সঠিক সাইজ জানা খুব জরুরি।
চলো, একদম সহজভাবে জেনে নেই হেলেমেটের সাইজ কিভাবে মাপতে হয়, আর কোন জিনিসগুলো মাথায় রাখা উচিত।

মাথার মাপ নেওয়া
প্রথমে একটা measuring tape (যেটা দর্জিদের কাছে থাকে) নিয়ে নাও।
- কপাল (forehead) থেকে শুরু করো।
- কান-এর ওপর দিয়ে মাথার পেছন ঘুরে আবার কপালে আনো।
- মানে মাথার পুরো circle মাপো।
- মাপটা হবে centimeter (cm) এ।

সাইজ চার্টে মিলাও
এখন তোমার মাপটা হেলমেটের size chart এ দেখে নাও।
Head Measurement (cm) | Helmet Size |
55-56 cm | Small (S) |
57-58 cm | Medium (M) |
59-60 cm | Large (L) |
61-62 cm | Extra Large (XL) |
63-64 cm | XXL |
(Brand ভেদে অল্প-স্বল্প পার্থক্য হতে পারে, তাই কিনার আগে chart দেখে নেওয়া ভালো।)

কেনার আগে পরিধান করে নেওয়া
মাপ মিলে গেলেও, হেলমেট একবার পরে দেখা ভালো। হেলমেট সাধারনত একদম ঠিক মাপের হওয়া উচিত। মানে লুজ না, আবার একদম খুব টাইট ও না। মাথা নড়ালে যেন হেলমেট নড়বে, কিন্তু মাথা ঘুরবে না এবং গালের পাশে হালকা চাপ পড়বে এটাই পার্ফেক্ট ফিটিং।
Helmet Type (হেলমেটের ধরণ)
সব হেলমেট এক রকম নয়
- Full-face helmet হলো সবচেয়ে নিরাপদ।
- Open-face helmet হলো হালকা, কিন্তু কম নিরাপদ।
- Modular helmet হলো full-face ও open-face দুইভাবেই ব্যবহার করা যায়।
- Half helmet হলো শুধু মাথার উপরের অংশ ঢাকে, যেটা সবচেয়ে রিস্কি।
Head Shape (মাথার আকার)
শুধু মাপ নয়, মাথার শেপ ও গুরুত্বপূর্ণ।
- Round Oval হলো গোল মাথা।
- Intermediate Oval হলো সামান্য লম্বাটে (এশিয়ানদের মধ্যে বেশি)।
- Long Oval হলো লম্বা মাথা।
একই সাইজের হেলমেট, ভিন্ন শেপ এর জন্য কারও মাথায় আরামদায়ক হবে, কারও জন্য আবার আরামদায়ক না ও হতে পারে।
প্যাডিং এর বিষয়
ভালো হেলমেটের ভেতরে প্যাডিং থাকে।
- প্যাডিং হেলমেট প্রথমে একটু টাইট মনে হবে।
- কয়েকদিন পরে প্যাডিং নরম হয়ে ঠিক হয়ে যাবে।
- তাই শুরু থেকেই লুজ হেলমেট কেনা উচিত না।
Safety Standards
হেলমেটে অবশ্যই safety certification থাকতে হবে:
- DOT
- ECE 22.05 / 22.06
- ISI
এগুলো থাকলে বুঝবে হেলমেট আসলেই crash-tested।
Helmet Safety Certification মানে কী?
এগুলো হচ্ছে আন্তর্জাতিক স্ট্যার্ন্ডাড বা মানদণ্ড, যেগুলো প্রমাণ করে যে ওই হেলমেট আসলেই crash test আর lab test পাস করেছে। মানে শুধু সুন্দর দেখতে হলেই হলো না আসলেই দুর্ঘটনায় মাথা বাঁচাতে পারবে কিনা, সেটা নিশ্চিত করে এই certification গুলো।
DOT (Department of Transportation-USA)
এটা যুক্তরাষ্ট্রের Department of Transportation দ্বারা দেওয়া। DOT certified helmet মানে হলো হেলমেট minimum safety requirement মেনে তৈরি করা হয়েছে। DOT helmet impact test, penetration test, retention system test (strap strength) সবকিছুতে পরীক্ষা দেওয়া হয়। অনেক দেশ DOT helmet accept করে, কিন্তু কিছু জায়গায় অন্য standard compulsory। Helmet এর পেছনে ছোট্ট গোল বা rectangle DOT স্টিকার থাকে।
ECE 22.05 / ECE 22.06 (Economic Commission for Europe)
ECE হলো United Nations এর European branch এর দেওয়া স্ট্যার্ন্ডাড । এটি সবচেয়ে বেশি অনুমতি প্রাপ্ত helmet certification (প্রায় ৫০+ দেশে বাধ্যতামূলক)। ECE 22.05 ছিল পুরনো version, এখন নতুন ECE 22.06 চালু হয়েছে। ECE test, DOT এর চাইতে বেশি ভালো। মানে আরো বেশি দিক থেকে পরীক্ষা করা হয়। Crash test এর সময় হেলমেট বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে ইম্প্যাক্ট সহ্য করতে পারে কিনা দেখা হয়। ECE sticker সাধারণত white color এ থাকে, আর তাতে “E” লেখা থাকে।
ISI (Indian Standards Institute – India)
এটি ভারতের নিজস্ব safety standard। ভারতে ISI certified হেলমেট ছাড়া অন্য হেলমেট বিক্রি টেকনিক্যালি অবৈধ। তবে অনেক কম মানের খারাপ ISI sticker হেলমেট বাজারে পাওয়া যায়, তাই কিনতে গেলে আসল কিনা চেক করা জরুরি।
এক কথায় DOT হলো আমেরিকার মানদণ্ড। ECE 22.05 / 22.06 হলো ইউরোপের, এবং সবচেয়ে বিশ্বজুড়ে গ্রহণযোগ্য। ISI হলো ভারতের জন্য। বাংলাদেশে আসলে নির্দিষ্ট কোনো আন্তর্জাতিক হেলমেট স্ট্যার্ন্ডাড নেই, তাই বাইকাররা সাধারণত DOT বা ECE certification দেখে হেলমেট কেনা উচিত।
সাধারনত বেশি যেই ভুলগুলো করা হয়
শুধু ডিজাইন দেখে হেলমেট কেনা উচিত না। আর লুজ হেলমেট নিয়ে ভাবা যে “আরাম হবে” আসলে এটি হলো এক্সিডেন্ট এর জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। ছোট দূরত্ব গেলেও হেলমেট না পরা এটা একদম ঠিক না কারন এক্সিডেন্ট ছোট রাস্তায়তেও হতে পারে। আর হেলমেট শেয়ার করা উচিত না কারন এতে ফিটিং নষ্ট হয় সাথে hygienic problem এর কথা তো আছেই।
মনে রেখো, হেলমেট শুধু পুলিশ থেকে বাচার জন্য বা ফাইন থেকে বাচার জন্য নয়, হেলমেট হলো রাইডিং এর সময় সবথেকে সেফটি গিয়ার। অতএব be safe and ride safe.
