ফগ লাইট মামলা কি আসলেই হয় ? নাকি অন্য কিছু ? বিস্তারিত
This page was last updated on 29-Nov-2022 02:11pm , By Ashik Mahmud Bangla
শীতকাল চলে আসছে আর এই সময়টাতে ফগ লাইট ছাড়া বাইক ব্যবহার করা অনেকের জন্য কষ্টকর। কিন্তু ফগ লাইট মামলা নিয়ে অনেকেই বেশ দুশ্চিন্তায় থাকেন। অনেকেই জানতে চান ফগ লাইট মামলা কি আসলেই দেয়ার নিয়ম আছে কিনা। আবার অনেকের মতে ফগ লাইটের মামলা পুলিশ অযথা দিয়ে থাকে। কিন্তু কোন আইন না থাকলে পুলিশ কি আসলেই পারে কোন মামলা দিতে ? ফগ লাইট মামলা নিয়ে আইন কি বলে , চলুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
ফগ লাইট মামলা কি আসলেই হয় ? আইন কি বলে ?
ফগ লাইট মামলা নিয়ে আইন যা বলে সেটা জানলে আপনি হয়তো অবাক হবেন। আজ অনেকের ধারনাই সম্পূর্ণ বদলে যাবে।
সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ এর ৪০ ধারার ৩ উপধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত কারিগরি বিনির্দেশের (technical specification) ব্যত্যয় ঘটাইয়া কোনো মোটরযানের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, আসন বিন্যাস, হুইল বেইজ, রিয়ার ওভার হ্যাংগ, ফ্রন্ট ওভার হ্যাংগ, সাইড ওভার হ্যাংগ, চাকার আকৃতি, প্রকৃতি ও অবস্থা, ব্রেক ও স্টিয়ারিং গিয়ার, হর্ন, সেফটি গ্লাস, সংকেত প্রদানের লাইট ও রিফ্লেক্টর, স্পিড গভর্নর, ধোঁয়া নির্গমণ ব্যবস্থা ও কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ, শব্দ নিয়ন্ত্রণের মাত্রা বা সমজাতীয় অন্য কোনো কিছু পরিবর্তন করা যাইবে না।
উপধারা ৪ এ স্পষ্ট উল্লেখ আছে রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরযানের কোনো কারিগরি, অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
অর্থাৎ এখানে স্পষ্ট বলা আছে শুধু ফগ লাইট না , দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, চাকার আকৃতি, সেফটি গ্লাস, সংকেত প্রদানের লাইট ও রিফ্লেক্টর, ধোঁয়া নির্গমণ ব্যবস্থা ও কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ, শব্দ নিয়ন্ত্রণের মাত্রা যে কোন কিছু পরিবর্তনের জন্য আপনি মামলার সম্মুখীন হতে পারেন।
ফগ লাইট মামলা এর শাস্তি কি ?
৮৪ ধারায় একজন সার্জেন্ট মামলা করতে পারবে। ১ বছরের জেল হতে পারে অথবা সর্বোচ্চ ৩ বছর। ৩ লক্ষ টাকা জরিমানাও হতে পারে। মেট্রো এলাকায় পুলিশ কমিশনার চাইলে প্রথমবার ১৫ হাজার টাকা এবং ২য় বার একই অপরাধ করলে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারবে। এখান থেকে আপনি স্পষ্ট বুঝতে পারছেন যে আইনে মামলা এবং জরিমানার বিধান দেয়া আছে। তাই যারা মনে করেন পুলিশ অহেতুক মামলা দেয় তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
একজন সাধারণ বাইকার হিসেবে আমার মতামত
আমি দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা শহর এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন হাইওয়েতে ছুটে বেড়াচ্ছি। আমার প্রতিদিন মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। আমার বাইকের স্টক লাইটের যে আলো সেটা দিয়ে আমি কোনমতে বেড়িবাঁধ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে পারতাম। কিন্তু সমস্যাটা তখনই শুরু হয় যখন রাতের বেলা বাস , ট্রাক , লেগুনাগুলো একাধিক লাইট জ্বালিয়ে চলাচল শুরু করে।
তখন বাইকের স্টক লাইটে এটা বুঝে উঠার উপায় নেই সামনে কতোটুকু গ্যাপ আছে অথবা রাস্তার কি অবস্থা। মাঝে মাঝে তো বড় যানবাহনের আলোর ঝলকানি এমন হয় আমি বুঝতেও পারি না যে সামনের থেকে কোন কি যানবাহন আসছে। আবার স্টক লাইট দিয়ে যখন বাইক চালায় তখন তারা আমাকে চোখে না দেখে বহুবার চাপ দিয়ে রাস্তার বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে। শুধুমাত্র একটা পরিবহণের অগণিত আলোর ঝলকানি থেকে বাঁচতে বাধ্য হয়ে আমার ফগ লাইট ব্যবহার করতে হয়।
সবশেষে একটা কথা বলতে চাই , আইন আছে মামলা দেয়ার এখন সব জেনে আপনি ফগলাইট ব্যবহার করবেন কিনা এটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। নিরাপদ থাকি এবং নিয়ন্ত্রিত গতিতে বাইক রাইড করি।