নতুন বাইকে যে ৪ টি সমস্যা দেখা দিলে কখনো চিন্তিত হবেন না
This page was last updated on 20-Nov-2023 12:52pm , By Ashik Mahmud Bangla
নতুন বাইকে যদি কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আমরা সবাই কম বেশি চিন্তিত হয়ে যায়। কিন্তু আপনি জানেন কি নতুন বাইকে এমন কিছু সমস্যা থাকে যা সময়ের সাথে সাথে একাই দূর হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা কিছুদিন অপেক্ষা না করে নতুন বাইকটা বিক্রি করে দেন। কিন্তু এই কাজটা কখনো করা উচিৎ না। আপনি জানেন কি নতুন একটা বাইক থেকে সঠিক পারফরম্যান্স পাওয়ার জন্য বাইকটা কয়েক হাজার কিলো চলার প্রয়োজন হয়। আজ আমি এই সম্পর্কে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
নতুন বাইকে যে ৪ টি সমস্যা দেখা দিলে কখনো চিন্তিত হবেন না
১- মাইলেজ কম পাওয়াঃ
নতুন একটা কেনার পর আপনি যখন প্রথমবার বাইকে তেল নিবেন তখন আপনি বাইক থেকে ভালো মাইলেজ নাও পেতে পারেন। তাই আপনার নতুন বাইকে যদি এমনটা হয় তখন চিন্তিত হওয়ার কোন কারন নেই। আমাদের দেশের অধিকাংশ মোটরসাইকেল এর মাইলেজ নতুন অবস্থায় কম দিয়ে থাকে। আপনি জানলে অবাক হবেন আমি আমার লাইফে এমনও কিছু বাইক ব্যবহার করেছি যেগুলো ২৫০০ কি.মি থেকে ৩০০০ কি.মি পার করার পর বাইক থেকে আমি সঠিক মাইলেজ পেয়েছি।
সমাধানঃ
আপনি যখন নতুন কোন বাইক কিনবেন তখন কোম্পানি থেকে বলে দেয়া গাইড লাইন মেনে বাইক ব্যবহার করুন। নতুন বাইকের জন্য ব্রেক ইন পিরিয়ড অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ , তাই এটা মেনে চলার চেষ্টা করুন। আপনি যখন বাইক প্রথম সার্ভিসিং করাতে নিয়ে যাবেন তখন তাদেরকে মাইলেজ কম পাওয়ার বিষয়টি জানান। নতুন বাইক নিয়ম মেনে চালালে সময় মতো সার্ভিসিং করালে নতুন বাইকের মাইলেজ সমস্যা অনেকটায় কমে যায়।
আবার অনেক সময় দেখা যায় আমাদের নিজেদের কিছু ভুলের কারনে বাইকের মাইলেজ কমে যায়। মোটরসাইকেল তেল বেশি খাওয়ার কারন সম্পর্কে জানুন এবং এই বিষয়গুলো এড়িয়ে চলুন দেখবেন আপনার বাইক থেকে আপনি ভালো মাইলেজ পাবেন।
২- ইঞ্জিন অতিরিক্ত হিট হওয়াঃ
যে কোন নতুন বাইকের ইঞ্জিন অতিরিক্ত হিট হয় , তাই নতুন বাইকের ইঞ্জিন হিট হলে চিন্তা করার কোন কারন নেই। আর যারা ঢাকা শহরে বসবাস করেন তারা জানেন আমাদের নগরীর কি অবস্থা। নিজের রাইডিং স্টাইল , অতিরিক্ত ট্যাফিক জ্যাম , আবহাওয়া সব কিছু ইঞ্জিনের উপরে একটা প্রভাব ফেলে। তাই ছোট এই বিষয়গুলো নিয়ে অকারণে কখনো চিন্তা করবেন না।
সমাধানঃ
আপনার কোম্পানির নির্দেশনা অনুয়ায়ী বাইক সার্ভিস করান এবং বাইকে সব সময় সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন। তবে একটা কথা বলে রাখি আমাদের দেশে কিছু বাইক আছে যেগুলোর ইঞ্জিন সব সময় বেশি হিট হয়। সব কিছু ঠিক থাকার পরও যদি দেখেন বাইকের ইঞ্জিন অতিরিক্ত হিট হচ্ছে তাহলে বাইকের ইঞ্জিন হিট হওয়ার কারনগুলো চেক করে দেখুন। একটা নতুন বাইকের ইঞ্জিন ব্যবহার করতে করতে একটা নিদিষ্ট সময় পর গিয়ে অতিরিক্ত হিট হওয়ার সমস্যাটা অনেকটা কমে যায়।
৩- ক্লাচ অতিরিক্ত হার্ড থাকাঃ
অধিকাংশ নতুন বাইকের ক্ষেত্রে দেখা যায় বাইকের ক্লাচ হার্ড থাকে বা ক্লাচ ঘন ঘন লুস হয়ে যায়। আপনি যখন বাইকটা ব্যবহার করতে থাকবেন , একটা নিদিষ্ট সময় পর গিয়ে বাইকের ক্লাচ অনেকটায় সফট হয়ে যাবে। তবে এর জন্য আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে , এখন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
সমাধানঃ
নতুন বাইকের ক্লাচ হার্ড থাকলে আপনি যখন প্রথম সার্ভিসিং এ যাবেন তখন বাইকের ক্লাচ এডজাস্টমেন্ট ঠিক করে দিতে বলুন। ক্লাচ এডজাস্টমেন্ট ঠিক দেয়ার পর দেখবেন বাইকের ক্লাচ হার্ড অনেকটায় কমে যাবে। কিন্তু আপনি বাইকটা দীর্ঘদিন ব্যবহার করার পরও এডজাস্টমেন্ট সঠিক রাখার পরও যদি ক্লাচ হার্ড থাকে সেক্ষেত্রে আপনি ক্লাচ লিভার পরিবর্তন করে নিতে পারেন। অনেক বাইকে দেখা যায় ক্লাচ লিভার চেঞ্জ না করা পর্যন্ত ক্লাচের শক্ত ভাবটা দূর হয় না।
৪- ব্যাটারি সমস্যাঃ
নতুন বাইক শোরুম থেমে নামিয়ে অনেকেই অভিযোগ করেন ব্যাটারিতে সমস্যা , চার্জ কম ইত্যাদি। বর্তমানে আমাদের দেশের বাজারে যে বাইকগুলো পাওয়া যায় এই সব কোম্পানিগুলো তাদের বাইক নিয়ে বেশ সচেতন। তাই কোন কোম্পানি চাইবে না তাদের কোম্পানির নতুন বাইকে খারাপ ব্যাটারি দিতে। আর নতুন একটা ব্যাটারি ফুল চার্জ হওয়ার জন্যও বাইকটা মিনিমাম কিছু কিলো চালাতে হয়। তাই নতুন বাইকটা নিয়ে আগে চালিয়ে দেখুন।
সমাধানঃ
নতুন বাইক কেনার পর বাইকটা ৫০০ কি.মি চালিয়ে দেখুন। তারপরও যদি আপনার মনে হয় বাইকের ব্যাটারিতে সমস্যা সেক্ষেত্রে প্রথম সার্ভিসিং এর সময় সার্ভিস সেন্টারে সমস্যা সম্পর্কে অবগত করুন। আর আপনি যখন নতুন বাইক কিনবেন তখন এমন কোন কাজ করবেন না যার অলে আপনার বাইকের অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি বাদ হয়ে যায়।
নতুন বাইকের সাথে আমাদের সবার আবেগ জড়িয়ে থাকে তাই বাইকে যখন ছোট্ট কোন সমস্যা দেখা দেয় তখনি আমরা চিন্তিত হয়ে যায়। কিন্তু আমি বলবো নতুন বাইক ক্রয় করার পর এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে চিন্তিত হওয়ার কারন নেই। আর বাইক কেনার পর একটা নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত তো অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি থাকে তাই নতুন বাইকের যত্ন নিন আর সমস্যা দেখা দিলে প্রথম সার্ভিসিং এর সময় সমস্যাগুলোর ব্যাপারে সার্ভিস সেন্টারে জানান।