দুই চাক্কা করে লাকসাম থেকে কুয়াকাটা ভ্রমনের - শাওন মাহমুদ
This page was last updated on 29-Jul-2024 04:15am , By Saleh Bangla
লাকসাম থেকে ১ টা বাইকে করে আমরা ২ জন বন্ধু আমাদের কুয়াকাটা ভ্রমণের যাত্রা শুরু করি। আমি আর আমার বন্ধু MD Al Masud কুয়াকাটার উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা শুরু করি ২০ তারিখ বিকাল ৫ টার সময়। আমি আমার Yamaha RX115 নিয়ে কুয়াকাটার উদ্দেশ্য রওনা হই । প্রথমত আমাদের যাত্রা চাঁদপুরের উদ্দেশ্য। কারণ আমরা চাঁদপুর থেকে রাতের লঞ্চে করে বরিশাল যাব। লঞ্চের সময়সূচি জানিয়ে সাহায্য করেছিলেন চাঁদপুরে বাইকার xihan crz ভাই।
দুই চাক্কা করে লাকসাম থেকে কুয়াকাটা ভ্রমনের - শাওন মাহমুদ
সড়কপথে লাকসাম থেকে চাঁদপুরের দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। প্রায় ২ ঘন্টা পর আমরা চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটে গিয়ে পৌঁছলাম। প্রথমত আমরা হালকা নাস্তা খেয়ে বিশ্রাম নিলাম। চাঁদপুরে বাইকার xihan crz ভাইয়ের সাথে দেখা করার কথা ছিল। কিন্তুু দুঃখের বিষয় ভাইয়ের সাথে দেখা হল না।
কারণ ভাইয়ের নাম্বার টা আগ থেকে নেওয়া ছিল না। পরিশেষে দেখতে দেখতে রাত ৯ টা বেজে গেল আমাদের লঞ্চও ঘাটে চলে আসল,আমরাও উঠে পড়লাম উঠার ১০ মিনিট পর ই লঞ্চটা বরিশাল এর উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে দিল।
আমাদের লঞ্চ এর নাম হচ্ছে পূবালী-২ ঢাকা,বরিশাল,বরগুনা। যাত্রা পথে দুই বন্ধু গল্প করতে অনেক রাত হয়ে গেল। লঞ্চে এক ভাইয়ের সাথে পরিচয় হল ওনি বললেন আপনার বরিশাল না নেমে বরগুনা চলে যান ওখান থেকে কুয়াকাটা কাছে হবে।
এখন হঠাৎ মাথায় আসল বরগুনার বাইকার shuvo mia ভাইয়ের কথা, সাথে সাথে ভাইকে নক করলাম। পরবর্তীতে শুভ ভাইয়ের কথামত বরিশাল না নেমে আমরা সকাল ৭ টা বাজে বরগুনা নেমেছি। কারণ বরগুনা থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার।
আবারো সড়ক পথে আমাদের যাত্রা শুরু করে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পর ফেরী পারাপার হয়ে, আমতলী গিয়ে আমাদের এক বন্ধুর সাথে দেখা এবং তারসাথে সকালের নাস্তা খেয়ে তার থেকে বিদায় নিয়ে আবারো কুয়াকাটার উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করি। অনেক দূর যাওয়ার পর হঠাৎ বৃষ্টির কবলে পড়ি। একটু বিরতি নিয়ে আবারো যাত্রা শুরু করি। প্রায় ১ঘন্টা পর আমরা কুয়াকাটা পৌঁছলাম।
আগে থেকে কুয়াকাটা আমাদের হোটেল বুকিং দেওয়া ছিল। আমার সীভিউ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল উঠেছি। উঠেই আমরা রুম চেকিং দিয়েই বাইকটা কে নিয়ে সমুদ্রের পাড়ে চলে যাই। আমার অনেক দিন এর আশা পূরন হয়। সমুদ্রে অনেকক্ষণ বাইক চালিয়ে, হোটেল এ গিয়ে বাইক রেখে আবার গোসল করতে চলে গেলাম।
Also Read: A Joyride of 379 Km within 8 Hours (Part-2)
গোসল করে রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে, দুপুরে খাবার খেয়ে রুমে গিয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে বিকালে আবার বাইক নিয়ে লেবু বন ঘুরতে গিয়েছি। আসতে আসতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। রুমে গিয়ে বিশ্রাম নিয়ে আবার রাতে বের হয়েছি আমরা রাতে সমুদ্রের মাছ খেয়ে আবার রুমে চলে যাই। কারণ রাতে আর্জেন্টিনার খেলা ছিলো।
খেলা দেখা অবস্থায় হঠাৎ ফোন আসল কুয়াকাটা আসছেন জনি ভাই এবং স্নেহের ভাতিজা শান্ত ।খেলা দেখে আমরা ঘুমিয়ে গেছি হঠাৎ ভোরে জনি ভাইয়ের কল আসল উনি কুয়াকাটা চৌরাস্তায় এসে দাড়িয়ে আছেন । আমি তাদের কে রিসিভ করতে ওখানে যাই। রুমে এসে তাদের কে তাদের রুম বুঝিয়ে দিয়ে ফ্রেশ হয়ে আমরা নাস্তা করতে বের হয়েছি। নাস্তা খেয়ে রুমে গিয়ে গোসলের প্রস্তুতি নিয়ে বের হয়ে পড়ি সমুদ্রের উদ্দেশ্যে।
ওই দিন আবার শুক্রবার ছিল তাই বেশীক্ষণ সমুদ্রে থাকতে পারি নাই।রুমে গিয়ে আবার ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে আবারো রুমে এসে একটু বিশ্রাম নিয়ে দুপুরে খাবার খেতে বের হই। খাবার খেয়ে সমুদ্রের পাড়ে গিয়ে সবাই মিলে একটু আড্ডা দেই। বিকাল প্রায় ৪টার দিকে বাইক নিয়ে আমরা ঘুরতে বের হই আশেপাশের কয়েকটা স্পটে। এগুলো গুরার পর রাতের খাবার খেয়ে কিছু কেনাকাটা করে রুমে চলে আসি।
পরেরদিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আবারো বের হয়ে গেলাম । কারণ আজকে হাতে সময় খুব কম কয়েকটা স্পট বাকী রয়ে গেছে এগুলো কয়েকঘন্টার মধে শেষ করতে হবে। কুয়াকাটার স্পট গুলো হচ্ছে লেবুর চর,তিন নদীর মোহনা, বৌদ্ধ মন্দির,কাউয়ার চর,সূর্যদয় স্পট,লাল কাকড়ার দ্বীপ, কুয়াকাটার কূপ, আরো কত কী। সবগুলো স্পষ্ট শেষ করে ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি ১১:০০ টা বাজে। বরগুনা shuvo mia ভাইকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম বরিশাল থেকে লঞ্চ কখন ছাড়ে ওনি বললেন ঈদের কারণে বাইক লঞ্চ করে নেওয়া যাবে না।
তখন মনে একটু ভয় ঢুকে গেল। পরবর্তীতে তিনি আমাকে পটুয়াখালীর বাইকার safik ভাইয়ের নাম্বার দিলেন, ভাইয়ের সাথে কথা বললাম উনি বলছেন আপনি আসেন আমি লঞ্চে বাইক উঠিয়ে দিব। তখন একটু ভয়টা কেটে গেল।
এইদিকে হোটেল চেক আউট করতে হবে ১২:০০ টার মধ্যে। তাই হোটেল গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রুমে চেক আউট করে। বেরিয়ে পড়ি পটুয়াখালীর উদ্দেশ্য প্রায় ১ ঘন্টা পরে পটুয়াখালী গিয়ে safik ভাইয়ের সাথে কথা হয় পরিচয় হয়।
তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে পটুয়াখালী থেকে চাঁদপুরের কোন লঞ্চ নেই সরাসরি ঢাকার লঞ্চ। তো আর কী safik ভাইয়ের থেকে বিদায় নিয়ে দুপুর ৩ টার সময় লঞ্চে উঠে পড়ি, রাতে লঞ্চে খাওয়া, আড্ডা দিয়ে, হালকা ঘুম দিয়ে সকাল ৭ টার সময় আমরা ঢাকার সদর ঘাটে পৌঁছাই।
সদরঘাট থেকে একটানে মেঘনা ব্রিজ এসে আমরা সকালের নাস্তা করি। নাস্তা করে আবারো লাকসামে / বাড়ির উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করলাম।
অনেকদূর যাওয়ার পর দেখছি আমার পক্ষে বাইক চালানো সম্ভব না কারণ কাল রাতে ঠিক মত ঘুমাতে পারি নি। তাই ঘুমে অবস্থা পুরাই খারাপ। কাঁচপুর ব্রিজ পার হয়ে চা-য়ের জন্য একটা বিরতি দেই। চা খেয়ে চোখে মুখে পানি দিয়ে আবারো যাত্রা শুরু করি। এক টানে কুমিল্লা বিশ্বরোড এসে ৫ মিনিটের একটা বিরতি দিয়ে আবারো লাকসাম উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করি।
সকাল প্রায় ১০:৩০ মিনিটে বাড়িতে এসে পৌঁছাই। তবে একটা কথা বলা যায় বাংলাদেশের যেখানে যাই না কেন বাইকার ভাইয়েরা থাকলে কোন বিপদে ই পড়তে হয় না। ধন্যবাদ তিন জেলার তিন বাইকার ভাইকে । এই ট্যুরটা খুব ভালো ই ছিল বিশেষ করে মেরাজুল ইসলাম জনি ভাই আমাদের কে খুব আনন্দ দিয়েছিল। আমার ১ম লেখা। ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধৈর্য্য সহকারে, সম্পূর্ণ লেখা টি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ শাওন মাহমুদ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।