কেন মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন সিজ হয় এবং এর প্রতিকার কী ?
This page was last updated on 27-Aug-2025 07:47pm , By Rafi Kabir
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনকে বলা হয় বাইকের প্রধান অংশ। এই ইঞ্জিনেই পুরো বাইকের পারফরম্যান্স ও গতির রহস্য লুকিয়ে থাকে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, বাইকের ইঞ্জিন হঠাৎ কাজ করা বন্ধ করে দেয় বা সিজ হয়ে যায়। ইঞ্জিন সিজ হওয়া মানে ইঞ্জিনের ভেতরের অংশগুলো একে অপরের সঙ্গে লক হয়ে যাওয়া, যার ফলে বাইক একেবারেই চলতে পারে না। এটি শুধু ঝামেলারই না, অনেক সময় বড় ধরনের খরচের কারণও হয়ে দাঁড়ায়।
চলুন জেনে নেই কেন মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন সিজ হয় এবং এর প্রতিকার কী হতে পারে।

কেন ইঞ্জিন সিজ হয়?

ইঞ্জিন অয়েল ঘাটতি বা নষ্ট হয়ে যাওয়া
নিয়মিত ইঞ্জিন অয়েল না বদলালে তা ঘন হয়ে যায় বা লুব্রিকেশনের ক্ষমতা হারায়। এতে ইঞ্জিনের অংশগুলো শুকনো হয়ে ঘষা খেতে থাকে এবং এক সময় লক হয়ে যায়।

অতিরিক্ত গরম (Overheating)
কুলিং সিস্টেমে সমস্যা থাকলে, অথবা বাইককে দীর্ঘ সময় টানা বেশি রেভ/স্পিডে চালালে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। এতে পিস্টন ও সিলিন্ডার একে অপরের সঙ্গে আটকে যেতে পারে।
কম মানের বা ভুল গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার
বাইকের নির্দিষ্ট গ্রেডের অয়েল ব্যবহার না করলে তা ইঞ্জিনকে সঠিকভাবে প্রটেক্ট করতে পারে না। এতে ক্ষয়ক্ষতি বাড়ে এবং সিজ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
ফুয়েল মিশ্রণে সমস্যা (Lean Mixture)
কার্বুরেটর/ইনজেকশন সিস্টেমে সমস্যা থাকলে ফুয়েলে যথেষ্ট তেল ও বায়ুর মিশ্রণ নাও হতে পারে। এতে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়।
দীর্ঘদিন বাইক না চালানো
বাইক যদি দীর্ঘদিন না চালানো হয়, তাহলে ইঞ্জিনের ভেতরের অয়েল শুকিয়ে যায় এবং মরিচা (rust) ধরতে শুরু করে। আবার চালু করার সময় ইঞ্জিন সহজে নড়াচড়া করতে না পেরে সিজ হয়ে যেতে পারে।
ইঞ্জিন সিজ এর প্রতিকার কীভাবে করবেন?
নিয়মিত ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন
প্রতি ২০০০-২৫০০ কিলোমিটার পর অথবা ম্যানুফ্যাকচারারের নির্দেশনা অনুযায়ী অয়েল বদলানো উচিত।
সঠিক গ্রেড ও মানের অয়েল ব্যবহার করুন
বাইকের ম্যানুয়াল দেখে নির্দিষ্ট গ্রেডের অয়েল ব্যবহার করতে হবে। কম মানের অয়েল থেকে সবসময় দূরে থাকুন।
কুলিং সিস্টেম ঠিক রাখুন
লিকুইড কুলড বাইক হলে কুল্যান্ট নিয়মিত চেক করুন। এয়ার কুলড বাইক হলে ফিনগুলো পরিষ্কার রাখুন।
সঠিকভাবে বাইক চালান
নতুন বাইক চালু করার সময় (Break-in period) হঠাৎ বেশি স্পিডে তুলবেন না। আবার দীর্ঘ সময় হাই আরপিএম এ বাইক না চালানোই ভালো।
দীর্ঘদিন বাইক না চালালে যত্ন নিন
বাইক যদি ব্যবহার না করেন তবে অন্তত সপ্তাহে একবার স্টার্ট দিয়ে কিছুক্ষণ চালান। এতে ইঞ্জিন ভেতরে অয়েল সার্কুলেট হবে।
ইঞ্জিন অস্বাভাবিক শব্দ করলে অবহেলা করবেন না
টিকটিক বা নকিং শব্দ শুনলে দ্রুত মেকানিকের কাছে যান। কারণ এগুলো অনেক সময় সিজ হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ।
ইঞ্জিন সিজ হওয়া একটি বড় ধরনের সমস্যা, যা একবার হলে সহজে সারানো যায় না এবং খরচও অনেক বেশি হয়। তাই আগে থেকেই সচেতন থাকা সবচেয়ে ভালো প্রতিকার। নিয়মিত মেইনটেনেন্স, সঠিক অয়েল ব্যবহার, এবং সঠিকভাবে বাইক চালানো—এই তিনটি বিষয় মেনে চললে ইঞ্জিন সিজ হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্যে চলে আসবে।
