Yamaha R15M Monster বাইকে মাইলেজ পেয়েছি ৫৪.৩ - জাহিদ
This page was last updated on 30-Jul-2024 05:29pm , By Shuvo Bangla
আমি ফেরদৌস জাহিদ। আমার বাসা গাইবান্ধা জেলার, সাদুল্লাপুর উপজেলার, ধাপেরহাট ইউনিয়নে। আমি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। আজকে আমি আমার Yamaha R15M Monster এই বাইকটি সম্বন্ধে কিছু এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করবো।
আসলে ছোট থেকেই বাইকের প্রতি অনেক দূর্বল ছিলাম। প্রথম হাতেখড়ি আমার বাবার বাইক দিয়ে। স্কুলে পড়াকালীন ক্লাস 7/8 এ থাকতেই বাইক চালানোটা রপ্ত করতে পেরেছিলাম পুরোপুরি। তারপর থেকেই বাইক নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে ভালোবাসতাম।
Features Of Yamaha R15M & Yamaha R15 V4 - Team BikeBD
এই ভালোবাসাটাই একসময় ট্যুরের নেশায় পরিণত হয়ে যায়। সেই সাথে বিভিন্ন ব্রান্ড এবং বিভিন্ন মডেলের বাইকের প্রতি আসক্তি জন্মায়। এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ব্রান্ডের বিভিন্ন মডেল এর বাইক কিনেছি ও পরিবর্তন করেছি শখের বসে ও বিভিন্ন ক্যারাগরীর বাইকের ফিল নেয়ার জন্য।
এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩-১৪ টার মত বাইক পরিবর্তন করেছি বিভিন্ন ব্রান্ড বা মডেল এর। সেই লিস্টে কমিউটার বাইক এর সংখ্যাই বেশি ছিল সাথে ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক ও ছিল। তবে ফুল ফেয়ারিং স্পোর্টস বাইকের প্রতি দূর্বলতা ছিল অনেক আগে থেকেই। কিন্তু বাজেট স্বল্পতার জন্য এতদিন সেই ইচ্ছাপূরণ সম্ভব হয়নি।
মহান আল্লাহর ইচ্ছায় এইবার ইচ্ছাটা পূরণ করতে পেরেছি। Yamaha R15M Monster বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে একটি ১৫৫ সিসি পাওয়ারফুল ইঞ্জিন , যা প্রডিউস করে 18.4HP এবং 14.2Nm টর্ক , বাইকটিতে রয়েছে ৬ টি গিয়ার এবং লিকুইড কুল ইঞ্জিন।
Yamaha R15M Monster বাইকটি আমি এখন পর্যন্ত ১৫০০ কিলোমিটার চালিয়েছি। এর মধ্যে আমি ১০০০ কিলোমিটার ব্রেক ইন পিরিয়ড মেনেছি। এই প্রথম ১০০০ কিমি তে আমি ৪টি ইঞ্জিল অয়েল পরিবর্তন করেছি। বাইকটি কেনার পর থেকেই মনে হচ্ছিল বাইকটির ইঞ্জিন অনেকটা রিফাইন্ড।
প্রতিটি বাইকেরই কিছু ভালো আর খারাপ দিক থাকে।
Yamaha R15M Monster বাইকটির ভালো দিক -
- এটার প্রথম যে ফিচার ভালো লেগেছে সেটা হলো কুইক সিফটার বা ক্লাচ ছাড়া গিয়ার আপ সিফট করা। ৪০০০ আরপিএম এর থেকেই কুই সিফট করা যায় তবে স্মুথ সিফট করতে হলে ৬০০০+ আরপিএম এ করলে ভালো হয়। এটার মজার বিষয় হলে থ্রটল ছাড়তে হয়না আবার ক্লাচ ও করতে হয়না। খুব দ্রুত স্পিড গেইন করা যায়।
- ট্রাকশন কন্ট্রোল আছে এটি একটি সেফটি ফিচার। বালি বা পিচ্ছিল রাস্তায় বাইক থ্রটল দিলে চাকা স্কিড করেনা।
- ব্রেক এর সেফটির জন্য এবিএস তো আছেই।
- আপ সাইড ডাউন সাসপেনশন যেটা অনেকেই বলে আমাদের দেশের রাস্তার জন্য নাকি ভালোনয় তবে আমি চালিয়ে সব ধরনের রাস্তায় ভালোই ফিটব্যাক পেয়েছি।
- হেডলাইট প্রজেকশন ব্যবহার করেছে যা রাতের বেলা মোটামুটি চলার জন্য যথেষ্ট।
- মাইলেজ ও মোটামুটি ভালো।
- Yamaha R15M এর মিটারে অনেক ইনফরমেশন দেয়ার চেষ্টা করেছে কোম্পানি যেটা অনেক ভালো বিষয়। যেমন ঘড়ি সবসময় থাকে, কুলেন্ট ট্যাম্পারেচার শো করে, ব্যাটারি ভোল্ট শো করে, এভারেজ মাইলেজ শো করে, এভারেজ স্পিড শো করে। মিটারে দুইটা মোড রয়েছে যদিও এটা দিয়ে বাইকের পারফরম্যান্স এর পরিবর্তন হয়না শুধু মিটারের ইনফরমেশন এর কিছু পরিবর্তন হয়।
Yamaha R15M Monster বাইকটির খারাপ দিক -
- আসলে স্পোর্টস বাইক হিসাবে তেমন কোন খারাপ দিক আমি এখনও পাইনি। তবে সিটিং পজিশন ও পিলিয়ন সিট নিয়ে একটু সমস্যা তবে যেহেতু স্পোর্টস বাইক তাই এগুলো মানিয়ে নিয়ে চলতে হবেই।
মাইলেজ - ইকোনমি রাইডে মাইলেজ পেয়েছি ৫৪.৩ কিলোমিটার প্রতি লিটারে। হার্ড রাইড করে ৩৮-৪০ এমন পাইছি। স্পোর্টস বাইক হিসাবে মাইলেজ অনেক ভালো।
টপ স্পিড - সে ভাবে এখনও স্পিড চেক করা হয়নি কারন মাত্র ব্রেক ইন পিরিয়ড পার করলাম। বাংলাদেশে তিনটা প্রিমিয়াম কোয়ালিটির জাপানি ব্রান্ড এর স্পোর্টস বাইকের মধ্যে R15M ব্রেক, কন্ট্রোল, স্পিড সব দিক থেকেই মোটামুটি ভালো। বাইকটা চালালে একটা কনফিডেন্স আসে যেকোন পরিস্থিতিতে সে ব্রেক করলে কন্ট্রোল এ চলে আসবে।
এই বাইকটা নিয়ে এখন পর্যন্ত আমি লং ট্যূর দিয়েছি ২-৩ টা তবে ঢাকা থেকে আমরা বাসা গাইবান্ধা যেতে মোটামুটি ৩০০ কিলোমিটার মাঝে একটা ব্রেক নিয়ে চালিয়েছি। যেহেতু ঢাকা রংপুর হাইওয়েতে ৬ লেন এর কাজ চলতাছে তাই অনেক স্থানে রাস্তা ভাঙ্গা থাকার কারনে প্রোপার অফরোড ও স্মুথ হাইওয়ে বালুর রাস্তা সব রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে ওই রাইডে।
মোটামুটি সব জায়গায় পারফরম্যান্স ভালো পেয়েছি। শেষে একটা কথা বলতে চাই বাইক চালানোর সময় সবাই হেলমেট পরে বাইক চালাবেন সেটা যত কম দূরত্বেই হোক না কেনো। ধন্যবাদ সবাইকে।
লিখেছেনঃ ফেরদৌস জাহিদ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।