Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকের মালিকানা রিভিউ - মিরাজ
This page was last updated on 01-Aug-2024 01:40am , By Shuvo Bangla
হ্যালো বাইকার্স। আমি মিরাজ। আমি Yamaha R15 V3 ভার্সন এর বাইকটির ইউজার। বর্তমানে আমার বাইকটি চলেছে প্রায় ৫৫০০+ কিলোমিটার।
Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকের মালিকানা রিভিউ
আমি ফেনী জেলার সদর উপজেলাধীন ফেনী পৌরসভার ১৮ নং ওয়ার্ডের রামপুর এলাকার বাসিন্দা। পেশায় একজন ছাত্র। আমার জীবনে আমি আমার আত্মিয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের অনেক বাইক চালিয়েছি। কিন্ত আমার নিজের প্রথম বাইক হচ্ছে Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকটি ।
বাইকের প্রতি ভালোলাগা ছোটবেলা থেকেই। কেন জানি অন্য সব বাহন থেকে বাইকের প্রতি আকৃষ্ট বেশি হতাম। গাড়িও আমার অন্যতম ভালোলাগার একটি বাহন। কিন্ত সবচেয়ে বেশি ভালোলাগা কাজ করে বাইক রাইড করেই । যদিও আমাদের দেশের হাইওয়ে গুলো খুবই রিস্কি বাইকারদের জন্য। আমি বাইক কেনার আগ থেকেই বাইকিং কমিউনিটির সাথে চলাফেরা করতাম। যেমন আমাদেরই ফেনীর একটি টিম এর সাথে জীবনের প্রথম বাইকে লং ট্যুরে সাজেক যাই। এরপর থেকেই তাদের সাথে পিলিয়ন হয়ে বিভিন্ন যায়গায় যাওয়া হতো।
এছাড়া বাইকবিডি ও অন্যন্য গ্রুপে দীর্ঘদিন একটিভ আছি আমি। তবে যেই গ্রুপটির সাথে সবচেয়ে বেশি পরিচয় তা হল ‘‘বাইক বিডি’’। সম্ভবত ২০১৬ সাল থেকেই এই গ্রুপে বিচরন আমার। বাইকিং কমিউনিটির সাথে পথ চলতে চলতেই বাইকারদের প্রতি এবং বাইকিং এর প্রতি একটি ভালোবাসা জন্ম নেয়। আমি দীর্ঘদিন সিনিয়র ভাইয়াদের রিভিউ থেকে শুরু করে সব ধরনের খুটিনাটি বিষয় নিয়ে বিচার বিবেচনা করে আমার Yamaha R15 V3 Indonesian ভার্সন বাইকটি বেছে নিই।
Click To See Yamaha R15 V3 Indonesian First Impression Review In Bangla – Team BikeBD
যার ভিতর বাইকবিডির ফার্স্ট ইম্প্রেশন ভিডিও আমার বাইক সিলেকশন আরো সহজ করে দেয়। এছাড়া আমার এলাকার বড় ভাইয়ের কাছে ২০১৮ মডেলের Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকটা থাকায় আমার বেশি বেগ পেতে হয়নি বাইকটি চালিয়ে বুঝে নিতে যে বাইকটি আমার জন্য কেমন হবে। ওই ভাইয়ের বাইকটা দেখেই Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকটির প্রতি ভালোলাগা শুরু হয় আমার এবং এখন এই ভালোলাগা ভালোবাসায় রূপান্তরিত হয়েছে।
আমি দৈনন্দিন জীবনের নানা কাজ সহ বেশিরভাগ লং ট্যুরে যেতে Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকটি ব্যবহার করছি। আমার বাইকটির ক্রয়ের সময় মূল্যা ছিলো ৫,১০,০০০। বাইকটি নিয়েছিলাম রাজধানী ঢাকার মালিবাগস্থ হৃদয় মটরস থেকে। বাইক কিনেছিলাম ২৭ জুলাই ২০২০ এ, যদিও ৭-৮ দিন আগে থেকেই প্ল্যান করা ছিলো। যাই হোক সকালে আমি আমার ভাই ও একবন্ধু সহ গাড়ি নিতে চলে গেলাম হৃদয় মর্টরস এ।
আগে থেকে আমার ভাই হৃদয় মটরসের সাথে কথা বলে রাখায় সরাসরি ওখানেই চলে যাই এবং সব ঠিক করে এরপর ব্যাংকের থেকে টাকা ট্রান্সফার করি। তারপর সব ঠিক করে ফেনীর দিকে রওনা হই।
নিজের বাইক হিসেবে Yamaha R15 V3 Indonesian প্রথমবার চালালেও আগে বাইকটি বহুবার চালানো হয়েছে। তবে নিজের জীবনের প্রথম বাইক চালানো সব বাইকারেরই চিরস্বরনীয় একটি ব্যাপার।
Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকটির কিছু ফিচার্স-
বাইকটির ইঞ্জিন ১৫৫ সিসি,৪ স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার। বাইকটিতে যুক্ত আছে অত্যাধুনিক এফ আই (ফুয়েল ইনজেকশন) প্রযুক্তি। বাইকটি ১০০০০ RPM এ ১৯.১ HP ও ৮৫০০ RPM এ ১৫ NM টর্ক (Torque) উৎপন্ন করতে সক্ষম। এছাড়া বাইকটিতে Assist and slipper Clutch,VVA (variable valve actuation) সহ USD Suspension ব্যবহার করা হয়েছে। আমি ঢাকায় থাকিনা যার কারনে সার্ভিসিং এর ব্যাপার টা নিয়ে খুব সমস্যা হয়। আনঅফিসিয়ালি বাইকটি কেনায় এসিআই আমার বাইকের পেইড সার্ভিসও দিবেনা।
তাই লোকাল এক্সপার্ট ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমি আমার বাইক ৫,৫০০ কিলোমিটারে এখনো সেভাবে কোন সার্ভিসিং করাইনি। কিন্ত বাজে তেল ঢুকে যাওয়ায় FI ক্লিন করাতে হয়েছে। এছাড়া তেমন কোন সার্ভিসিং এর প্রয়োজন অনুভব করছিনা এখনো। প্রথমত বাইকের ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেন করার সময় প্রথম ২০০০ কিলোমিটার বাইকের মাইলেজ কম অর্থাৎ ৩৭-৩৮ পেলেও এখন অর্থাৎ ৩০০০ কিলোমিটার এর পর থেকে কিছুটা ভালো মাইলেজ পাচ্ছি প্রায় ৪১ সিটি রাইডে ও ৪৩-৪৫ হাইওয়ে রাইডে । যেহেতু একজন বাইকারের শখ ও আবেগ তার বাইককে ঘিরেই থাকে তাই এটি খুবই যত্নের একটি জিনিসও হয় বটে।
যদিও প্রথম প্রথম প্রায় প্রতি ৩/৪ দিন পর পরই ধোয়া মোছা করতাম। কিন্ত কালারে প্রবলেম হবে সবাই এটা বলে ভয় দেখানোর পর এখন ওয়াস করা কমিয়ে দিয়েছি। বাইকে ধুলো-ময়লা থাকবে আর সেটা পরিষ্কার না করেই আমি চালাবো এটা হয়না। আর মেইনটেন্যান্সের বিষয়ে আমি খুবই তৎপর। নিজের প্রয়োজনের চেয়ে বাইকের দিকটিকে বেশি প্রাধান্য দেই আমি।
R15 V3 বাইকটিতে প্রথম ৪৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত Yamalube 10w40 গ্রেডের মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলেও এখন Motul 300v 10W40 Synthetic ব্যবহার করছি।
Yamalube এর দাম ৫০০ টাকা এবং বর্তমানে ব্যবহারকৃত Motul 300v এর মূল্য ১৫০০ টাকা। বর্তমান ইঞ্জিন অয়েলে বাইকের স্মুথনেস ও গিয়ার সিফটিং অসাধারন যদিও আগের টাও কোনোভাবেই খারাপ ছিলোনা। কোনো পার্টসই আলহামদুলিল্লাহ্ এখনো পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়নি। কিছু মডিফিকেশন করেছি উইন্ডশিল্ড এ স্মোকি ভাইজর, Exhaust guard, নিচে লং আন্ডার ভ্যালি লাগিয়েছি, রেডিয়েটর গার্ড লাগিয়েছি। এগুলো ছাড়াও সামনে হেড লাইটের নিচে উইংলেট লাগিয়েছি। Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকটি সর্বোচ্চ ১৩৮ টপ স্পিডে রাইড করেছি এখন পর্যন্ত।
Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- অসম্ভব সুন্দর লুক।
- স্মুথ কন্ট্রোলিং।
- দ্রুত গিয়ার সিফটিং।
- দ্রুত বাতাশ কেটে গতিশীল করতে সাহায্য করে।
- ইমারজেন্সি ইন্ডিকেটর।
Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- স্টক হেডলাইটের আলো কম।
- খুব অল্পতেই স্টিয়ারিং নড়াচড়া করা, যাকে সম্ভবত ট্যাংক স্লেপার বলে।
- ছোট পিলিওন সিট।
- সিটি রাইডের জন্য কিছুটা অনুপযোগী।
- পিলিওনের কিছু ধরার গ্র্যাব রেইল না থাকায় ব্রেক করলেই পিলিয়ন সামনে চলে আসে।
বাইকটি নিয়ে আমি এখন পর্যন্ত সিলেট, সুনামগঞ্জ, খাগড়াছড়ি,সাজেক, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। যেহেতু স্পোর্টস বাইক তাই এটি নিয়ে লং ট্যুরে শান্তি নেই বললেই চলে। সিটিং পজিশনের কারনে হাতে, ঘাড়ে ও কোমরে ব্যাথা অনুভব হয় দীর্ঘক্ষন চালালে। আমার কাছে আমার জন্যে সব দিক বিবেচনায় Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকটি খুব ভালো লাগে । সব জিনিসেরই যেমন ভালো দিক আছে তেমনি খারাপ দিক ও আছে। তাই সব দিক পজিটিভ না হওয়াটাই স্বাভাবিক। সার্বিক দিক বিবেচনায় আমি Yamaha R15 V3 Indonesian বাইকটি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মিরাজ
আশা করি মিরাজ ভাই এর ইউজার রিভিউটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। ইয়ামাহার এমন ইউজার রিভিউ এবং r15 v3 price in bangladesh এর সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক গ্রুপ ঘুরে দেখুন। তাছাড়া বাইক সম্পর্কিত যেকোন তথ্য পাবেন আমাদের ওয়েবসাইটে। আপনাদের মূল্যবান বক্তব্য এবং r15 v3 ভালো বা খারাপ দিক আপনার কাছে কোনটা মনে হয় সেগুলো আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন ।
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।