Yamaha Fzs Fi V3 ৮,০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - আহসান শিশির
This page was last updated on 01-Aug-2024 12:10pm , By Raihan Opu Bangla
আমি আহসান শিশির । আমি বগুড়া বসবাস করি । বর্তমানে আমি একটি Yamaha Fzs Fi V3 বাইক ব্যবহার করি । বাইকটি বর্তমানে ৮,০০০+ কিলোমিটার রাইড করেছি । আজ আমার প্রিয় বাইকটির ব্যাপারে কিছু লিখবো ।
Yamaha Fzs Fi V3 ৮,০০০ কিমি মালিকানা রিভিউ
আমি বগুড়াতে থাকার কারনে বাইকটি বেশিরভাগ সময় বগুড়াতেই চালানো হয় । আর যখন ট্যুর করি তখন বগুড়ার বাইরে যাওয়া হয়। বাইকটি নিয়ে আমি ঢাকা, টেকনাফ, বরিশাল, মংলা বন্দর, ফরিদপুর, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, রংপুর এর বিভিন্ন জেলাতে গিয়েছি ।
আমার জীবনের প্রথম বাইক ছিল Yamaha Fz V1 বাইকটি আমি ২০১৩ সালে ক্রয় করে দীর্ঘ ৮ বছর ব্যবহার করে নতুন মডেল এর বাইক নেওয়ার ইচ্ছের হওয়ার কারনে Yamaha Fzs Fi V3 বাইকটি ক্রয় করি । ছোট থেকেই বাইক এর প্রতি এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করতো আর এই ভালোলাগা থেকেই বাইকার হয়ে উঠা । আর বাইকার হওয়ার পরে এখন বাইক ট্যুরিং এর ব্যাপারটা আরো বেশি পছন্দের হয়ে উঠেছে । ২০১৩ সালে যখন প্রথম বাইক ক্রয় করি তখন আমার Yamaha Fz V1 বাইকটা আমার ভালো লাগে এবং এই ভালোলাগা থেকে এখন পর্যন্ত ইয়ামাহার সাথেই পথ চলা। কখনো FZ সিরিজ আমাকে অন্য ব্রান্ড এর বাইক কেনার প্রয়োজন অনুভব করায়নি । Yamaa Fzs Fi V3 বাইকটি বগুড়ার ইয়ামাহার অফিসিয়াল শো-রুম থেকে কেনা। বাইকটি আমার বাবা-মাকে সাথে নিয়ে তাদের পছন্দে ক্রয় করি । বাইক এর চাবি হাতে পেয়ে প্রথমে আমার মা-বাবাকে নিয়ে রাইড করি । দিনটি ছিল অনেক সুন্দর ও আনন্দময়। নতুন বাইক রাইড করার মধ্যে অন্যরকম এক ভালো লাগা কাজ করে । আমি যখন ক্লাস ৫ এ তখন আমার চাচা ও মামা আমাকে বাইক চালানো শিখিয়েছিল। দাদার বাসায় যখন যেতাম তখন চাচার কাছে শিখতাম এবং নানা বাসায় গেলে মামার কাছে শিখতাম ।একদিন হঠাৎ বাবা কে বাইক কেনার কথা বললাম বাবা বললো চলো বাইক দেখতে যাবো তারপর দিনই বাইক কিনে নিয়ে চলে আসি। Yamaha FZS V3.0 নিয়ে বলতে গেলে সবার আগে বলতে হবে এর Anti Lock Braking System (ABS) নিয়ে। সিঙ্গেল চ্যানেল ABS এক কথায় অসাধারণ। এই বাইকের এবিএস আমাকে যেকোন পরিস্থিতে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম । এছাড়া বাইকটি লুকস জন্য অসাধারণ। বাইকটির ফুয়েল ধারণ ক্ষমতা ১২ লিটার হওয়ায় এবং মাইলেজ ভালো হওয়ায় লং ট্যুরে বারবার ফুয়েলের চিন্তা করতে হয় না। বাইকটির আকর্ষনীয় দিক হচ্ছে এর চাবির সুইচ এবং মিটারের স্টার্টিং ডিস্প্লে । ফুয়েল ট্যাংকের কাছে চাবি রাখর সিস্টেমটা আমার খুব ভালো লেগেছে ।
Yamaha FZS FI V3 Review By Team BikeBD
LED হেডলাইট থাকায় রাতে নিশ্চিন্তে রাইড করা যায়। বাইকটির সামনে পিছনে টায়ারের সাইজ 100/80 এবং 140/60 হওয়ার কারনে বাইকটি দিয়ে কর্নারিং এ কোন সমস্যাই হয়না । পিলিয়ন সীটটি প্রশস্থ থাকায় আমার মা-বাবা কে নিয়ে স্বাচ্ছন্দে রাইড করতে পারি। রাইডারের সিট যথেষ্ট কম্ফোর্ট । বাইকটিতে এভারেজ ৪০-৪৫ মাইলেজ পাওয়া যায় । বাইকটি থেকে টপ স্পীড পেয়েছি ১২৫ আর ৮০-৯০ স্পীডে বাইকটি সফল ভাবে নিয়ন্ত্রনে থাকে। সব থেকে মজার ব্যাপার হচ্ছে বাইকটি একটানা রাইড করেও যাত্রা পথে আমাকে আরামদায়ক একটি ভ্রমন উপহার দেয় । ব্যাক পেইন এর কোন সম্ভাবনা এই বাইকে নেই ।
Also Read: বাংলাদেশে লঞ্চ হলো Yamaha FZS Fi V3 - চলছে প্রি-বুকিং
ব্রেকিং পিরিয়ড সঠিক নিয়মে মানলে এবং সব সময় ভাল ফুয়েল ব্যবহার করলে Yamaha Fzs Fi V3 বাইকটি হতে পারে আরও দীর্ঘদিনের পথ চলার সঙ্গী। আমি সব সময় বগুড়ার অফিসিয়াল শো-রুম এ সাভিস করাই বাইরে কোথাও কাজ করাইনা বললেই চলে। সার্ভিস সেন্টার এর সার্ভিস এর মান যথেষ্ট ভালো । ২৫০০ কিলোমিটার আগে ৪০+ মাইলেজ পেতাম এবং বর্তমানে ৪৫+ মাইলেজ পায়।আমি নিয়ম অনুযায়ী বাইকটি ব্যাবহার করি সঠিক যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করি । সময় মত সার্ভিস করাই । ভালো ফুয়েল ব্যবহার করি । এখন পর্যন্ত কোণ প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হইনি । খুব ভলো পার্ফরমেন্স পাচ্ছি । ইঞ্জিন অয়েল হিসেবে প্রথমে ইয়ামালুব ব্যবহার করতাম 10w40 গ্রেডের যার দাম ৪৯৫ টাকা । বর্তমানে ইয়ামালুব এর ফুল সেন্থেটিক ব্যবহার করি যার দাম ১১৫০ টাকা । সেন্থেটিক এর পার্ফরমেন্স খুব ভালো পাচ্ছি । ইঞ্জিন এর কোন কিছু এখনো পরিবর্তন করতে হয়নি। বাইক এ কোন মোডিফাই করি নাই । বাইকটি নিয়ে লং ট্যুর এর মধ্যে বগুড়া থেকে বরিশাল গিয়েছি। হাইওয়েতে বাইকটীর পার্ফরমেন্স অনেক ভালো লাগছে কোনো প্রকার সমস্যা হয়নি । পরিশেষে বলতে গেলে Yamaha Fzs Fi V3 বাইকটি একটি অসাধারণ বাইক। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ আহসান শিশির
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।