Suzuki Gixxer ৬০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - শাকিল

This page was last updated on 06-Jan-2024 03:14pm , By Shuvo Bangla

আমি মোঃ শাকিল অরনব, সিরাজগঞ্জ, কাজিপুর বসবাস করি । আমি আজ আপনাদের সাথে Suzuki Gixxer বাইকের মালিকানা রিভিউ শেয়ার করবো । এখন ঘটনায় আসি প্রত্যক ছেলের আবেগ ভালোবাসা হলো তার একটি পছন্দের বাইক, তেমনি আমার জীবনের প্রথম বাইক ছিলো TVS Apache RTR 160 4V । 

বাইক টা কিনেছিলাম গত বছরে ,মানে ২০২২ সালের অক্টোবরের ২০ তারিখে। বাইকটা মূলত আমি পুরাতন বাইক শো-রুম থেকে নিয়েছিলাম, বাইক কিনতে যাওয়ার দিনটা সে যে একটা অনুভূতি তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়, বাইক কিনতে গিয়েছিলাম আমি, মামা এবং আমার খালাতো ভাই,আমার বাবা বেঁচে নেই,বেচে থাকলে হয়তো তিনিও যেতেন ।

বাইকটা কিনেছিলাম বগুড়ার বনানী তে প্রামানিক হোন্ডা সেন্টার থেকে। বাইক কেনার এতোটাই পাগল হয়ে গেছিলাম যে ঠিক করেছিলাম Suzuki ব্রান্ডের Gixxer সিরিজের বাইক নিবো,কিন্তু শো-রুমে গিয়ে দেখলাম Suzuki Gixxer কোনো বাইক এভেলেবল নেই, TVS 4v ছিলো এবং বেশ কয়েকটা Yamaha FZ সিরিজের V2/V3 বাইক ছিলো । 

পছন্দ করা বাইকটা পেলাম না, আশে পাশেও ২/১ টা শো-রুম ছিলো সেখানেও দেখলাম একই অবস্থা, মন টা অনেক খারাপ হয়ে গেলো । মনে মনে জেদ উঠে গেলো বাইক কিনতে আসছি বাইক আজকে কিনবোই, যেই কথা সেই কাজ । বাজেট একটু কম থাকার কারনে Yamaha'র দিকে আর যেতে পারলাম না । নিয়ে নিলাম 4v লাল কালারের বাইকটা । 

লাল কালার আমার খুবই অপছন্দ, তারপরও লাল কালারের বাইক টাই নিয়েছি তাহলে বোঝেন কতটা পাগল হয়ে গেছিলাম । যাই দাম দর এক পর্যায়ে মিটেই গেলো, তারাও আমার পাগলামো দেখে অনেক সুযোগ ও ব্যবহার করেছিলো, গাড়ির দাম মিটলো ১ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা । ওহ হ্যা বাইক টা ছিলো অনটেস্ট। বাসায় আসলাম সবাই অনেক খুশি। আমি তো বাইকের অনেক যত্ন নেওয়া শুরু করে দিলাম,আজকে এটা লাগাই কালকে ওটা লাগাই,আবার তারপরের দিন কি লাগানো যায় সেটা ভাবি । 

ভালই পারফরম্যান্স দিচ্ছিলো আমার বাইকটা । আমি আগে থেকেই বাইক ধীরে চালাতে পছন্দ করতাম, আমার স্বাভাবিক স্পিড থাকতো ৫০ এর মধ্যই, একদিন একটু টপ স্পিড চেক করার জন্য ১০৮ উঠাইছিলাম আরো উঠতো কিন্তু আমার হার্টবিট বেড়ে গেছিলো তাই আর উঠাই নাই । এভাবে ভালই কেটে গেলো কয়েক মাস কিন্তু, আস্তে আস্তে আমি টের পাওয়া শুরু করলাম বাইকটা বোধহয় মাইলেজ অনেক বেশি কম দিচ্ছে ।একদিন মাইলেজ টেস্ট করলাম ১ লিটারে মাত্র ২৫/২৬ মাইলেজ পেলাম। কয়েক মাসের মধ্যেই আরও কিছু বুঝতে বাকী রইলো না বাইকের ওডোমিটার অর্থাৎ মিটার টেম্পারিং করা ছিলো অনেক বেশি । বাইকটি প্রায় ১০ হাজারের মত রানিং ছিলো আসল মালিকের থেকে জানতে পারলাম কিন্তু আমি যখন কিনলাম তখন মিটারে ছিলো মাত্র ১১০০ কিলোমিটার । 

আমি আগে থেকেই একটু জানতাম সেকেন্ড হ্যান্ড শো-রুমের বাইক মিটার টেম্পারিং করা থাকে কিন্তু জানতাম না এতোটা করে রাখে। আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে এটা ভেবে মনকে শান্তনা দেওয়া শুরু করলাম । কিছুদিন পর গেলাম টিভিএস এর শোরুম বগুড়ার শেরপুরের KS Motors এ সার্ভিস করানোর জন্য যা যা সমস্যা ছিলো বললাম এবং তারা সার্ভিস করিয়ে দিলো। 

ভালই চালিয়ে বেশ মজা পেয়েছিলাম তখন, এভাবে আরো বেশ কিছু দিন যাওয়ার পর বাইকটা এক পর্যায়ে সেল করে দিলাম । এবং কিনে ফেললাম সুজুকির শোরুম আল মদিনা বাইক সেন্টার থেকে নতুন Gixxer কালো কালার এর বাইকটি , বাইকের দাম ছিলো ১,৯৩,০০০ টাকা । এবং ৮ হাজার টাকা ক্যাশব্যাক অফারে আমার প্রাইস পড়েছিলো ১,৮৫,০০০ টাকা । 

জিক্সার মনোটন নিয়ে বলার মত কিছুই নেই , আমার কাছে মনে হয় ২ লাখ টাকার আশে পাশে জিক্সার মনোটনের ওপর কোনো বাইক নেই বাংলাদেশে। অনেক ভাল ব্রেকিং কন্ট্রোল সিংগেল ডিস্ক হিসেবে এবং অনেক বেশি কমফোর্টেবল। অভারঅল বাইকটার লুক দেখেই অনেকেই প্রেমে পড়ে যায়, এবার আসি মাইলেজে আগেই বলেছি আমি বাইক বেশি জোরে টানাটানি করি না । 

৫০ এর মধ্যে স্পিড রেখে মাইলেজ হিসেব করে পেলাম ৪৫/৪৬ পার লিটারে । খারাপ কি ১৫৫ সিসি ইন্জিনে সন্তোষজনক মাইলেজ ছিলো , প্রত্যকটা বাইকের যেমন কিছু ভাল দিক এবং খারাপ দিক থাকে তেমনি মনটনে ও আমি খেয়াল করলাম একা চালানোর জন্য বেস্ট, পিলিয়ন সিটটা আমার কাছে অনেক প্যারা মনে হয় । তেমন কমফোর্টেবল না, হালকা একটু ব্রেক করলেই সামনে চলে আসে পিলিয়ন এবং পিলিয়ন নিয়ে লং রাইড করলে হাতের কবজি ব্যাথা করে । 

আরেকটি সমস্যা হলো এই বাইকটি ২০১৬ সালে লঞ্চ হয় তখন হেডলাইট হিসেবে হ্যালোজেন লাইট ছিল । তবে ২০২৩ এ এসে এটা আপডেট করে এলইডি  দিলো । আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো হর্ণের আওয়াজ ১৫৫ সিসির বাইকে হর্ন টা যেন ৮০ সিসি বাইকের মত । এই বাইকের ক্লাচ এবং গিয়ার শিফটিং খুবই হার্ড । এই ছিলো আমার বাইকের ভালো দিক এবং কিছু খারাপ দিক আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে আমি সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এবার আসি বাইকের সার্ভিসের বিষয় নিয়ে, এখন পর্যন্ত কোনো পেইড সার্ভিস করাতে হয়নি ফ্রী সার্ভিসিং গুলো একের পর এক করে নিচ্ছি, আমার মনে হয় এই বাইকের মেইনটেইন্স খরচ টাও কম এখন পর্যন্ত শুধু ইঞ্জিন অয়েল এবং অয়েল ফিল্টার চেঞ্জ করে যাচ্ছি  আমি সুজুকি রিকমন্ডেড মবিল Motul 10w40 ব্যবহার করছি যার দাম ৬৩০ টাকা । বাইকের বয়স আজ প্রায় ৮ মাস,  আর এই ৮ মাসে চালিয়েছি প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার । 

কর্মস্থল বাড়ির পাশেই হওয়াই তেমন চালানো হয় না, আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত কোনো পার্টস পরিবর্তন করতে হয়নি,শুধু এক্সেসরিসের মধ্য বাম্পার , শাড়ী গার্ড এবং সাইলেন্সার গার্ড লাগিয়েছি এবং একটা সুন্দর সিট কভার লাগিয়ে নিয়েছি।

সর্বোপরি আমি বলতে চাই, ২ লক্ষ টাকা বাজেটে সুজুকি জিক্সার মনোটন একটি বেস্ট বাইক আমার কাছে মনে হয়, যা অধিক পরিমাণে মাইলেজ এবং আপনার মেইনট্যানেন্স খরচ সাধ্যর মধ্যেই রাখবে। এই ছিলো আমার মতামত। ধন্যবাদ ।

লিখেছেনঃ  মোঃ শাকিল অরনব

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

Honda SP160 (Single Disc)

Honda SP160 (Single Disc)

Price: 197000.00

Lifan Blues 150

Lifan Blues 150

Price: 0.00

Lifan KPV350

Lifan KPV350

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Bajaj Freedom 125

Bajaj Freedom 125

Price: 0.00

Lifan K29

Lifan K29

Price: 0.00

455500

455500

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes