Suzuki Gixxer ২৩,০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - রাব্বি
This page was last updated on 21-Nov-2023 03:05pm , By Shuvo Bangla
আমি রাব্বি আল ইসলাম । অনার্স সম্পূর্ণ করে বর্তমান ব্যবসা করি , আপনাদের সাথে আমি আমার ব্যবহার করা Suzuki Gixxer বাইকটির রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
Suzuki Gixxer ২৩,০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - রাব্বি
আমার শখ ভ্রমণ করা, বাসা চুয়াডাঙ্গা জেলা । আমি এখন আমার জীবনের প্রথম বাইকের অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো। আমার জীবনের প্রথম বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা হয় Gixxer বাইক দিয়ে যেটা ছিলো আমার মামাতো ভাই এর ।
২০১৬ সালে বাইক চালানো শিখি এবং সেখান থেকেই আমার মনের ভেতরে জিক্সারের প্রতি একটা ভালোবাসা ছিলো টাকা জমিয়ে জিক্সার ই কিনবো, আসলে মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে হওয়ার কারনে কিনতে অনেক দেরি হয়ে গেছে, অবশেষে ২০১৮ সালের ১৭ মে আমার জীবনের প্রথম বাইকটি আমার বাবা কিনে দেন ।
বাইকটি নীল রঙ এর সিংগেল ডিস্কের যার দাম ছিলো ১,৭৬,০০০ টাকা । বাইকটি কিনতে সুজুকির শোরুম এ আমি এবং আমার আব্বু যাই , আমার বাসা থেকে শোরুম ১ কিলোমিটার দূরে চুয়াডাঙ্গা থেকে বাইকটি নিই । প্রথম দিনই ৪০ কিলোমিটার, রাইড করি ।
সত্যি বলতে আমার স্বপ্ন টাকে যখন আমি বাস্তবে চালাচ্ছিলাম মনের ভেতরে এতো শান্তি পেয়েছি বলে বুঝানোর মতো না, বাইকের প্রথম ২৫০০ কিলোমিটারে আমি ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন করি খুব সুন্দর ভাবে । ৫ বার ইঞ্জিন অয়েল এবং ফিল্টার পরিবর্তন করি । ৫০০০ আর পি এম রেখে বাইক চালাতাম।
ব্রেক ইন পিরিয়ড এর সময় ৪০ মাইলেজ পেতাম কিন্তু তার পরে ৪৫+ পেয়েছি । বর্তমানে বাইক ২৮,০০০ কিলোমিটার রানিং সেইম পারফর্মেন্স পাচ্ছি। বাইকের ব্রেকিং, কর্নারিং, স্মুথনেস অবাক করার মতো।
বাইক নিয়ে ডে লং ট্যুর দিয়েছি ৪৫০ কিলোমিটার চুয়াডাঙ্গা থেকে মাওয়া এক্সপ্রেস । লং রাইডে ৭ দিনের ট্যুর এ ২৫০০ কিলোমিটার রাইড করি । বাইকের কন্ডিশন এতো ভালো পেয়েছি একটু ও কষ্ট বোধ মনে করিনি এতো জার্নি করে ।
সিটিতে সর্বদা ৪০+ মাইলেজ পাই হাইওয়েতে ৪৫+ মাইলেজ পাই । বাইকের টপ স্পিড চেক করেছি মাওয়া এক্সপ্রেস ওয়েতে যেখানে আমি সিংগেল রাইডে ১২৩ টপ স্পিড পেয়েছি । পিলিয়ন নিয়ে ১১৮ টপ স্পিড পেয়েছি । বাইকে এই পর্যন্ত নতুন লাগিয়েছি ইমারজেন্সি সুইচ , চাকায় জেল দিয়েছি, হেড লাইট চেঞ্জ করেছি, কিছু স্টিকার মডিফাইড করেছি ।
১৫,০০০ কিলোমিটারে সামনের চেইন স্পোকেট পরিবর্তন করেছি এবং ২৩,০০০ কিলোমিটারে চেইন স্পকেট এর ফুল সেট পরিবর্তন করেছি। আল্লাহর রহমতে কোনো এক্সিডেন্ট হয়নি, আসলে কন্ট্রোলিং অনেক ভালো ।
যখন বাইক নিয়ে বের হই তখন কিক দিয়ে ইঞ্জিন ৩ মিনিট হিট করে রাখি তার পর রোডে বের হই । বাইকের পারফরম্যান্স দিন দিন আমাকে মুগ্ধ করেই যাচ্ছে, আমার বাইকটি নিয়ে এখনো পর্যন্ত ৩৪ জেলা ট্যুর শেষ করেছি, ইনশাআল্লাহ বাকি ৩০ জেলা ও শেষ করবো।
বাইকে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রব্লেম পাইনি, বাইকে বৃষ্টি কাদা লাগলে তখনি ধুয়ে ফেলি, সব সময় অকেটেন ব্যাবহার করি । ইঞ্জিন অয়েল লিকুই মলি ব্যাবহার করি । 10w40 গ্রেডের মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি যার দাম ৫৫০ টাকা । ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ইঞ্জিন অয়েলটি ব্যবহার করি ।
বাইকে অফিসিয়াল ভাবে ৪ বার সার্ভিস করানো হয়েছে ৫০০ কিলোমিটার পর পর সার্ভিস করিয়েছি । প্রত্যেক বার ট্যুরের পরে ব্রেক প্যাড ও ব্রেক সু ক্লিন করি। বাইকে ব্রেক প্যাড ক্ষয় হয়ে যাওয়ার কারণে পরিবর্তন করেছি ও এয়ার ফিলটার পরিবর্তন করেছি একবার।
বাইক রাইড দেওয়ার সময় সার্টিফাইড হেলমেট ব্যাবহার করি যেটা নিজের সেফটির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
Suzuki Gixxer বাইকের কিছু ভালো দিক -
- লুকিং গ্লাস ও হ্যান্ডেল বার অনেক সুন্দর।।
- ব্রেকিং সিস্টেম টা চমৎকার।
- কর্নারিং।
- ব্রেকিং ।
- মাইলেজ ।
Suzuki Gixxer বাইকের কিছু খারাপ দিক -
- লং রাইডে ব্যক পেইন হয়।
- আমার বাইক টি সিংগেল ডিক্স হওয়ার কারনে ড্রাম ব্রেক এ তেমন কনফিডেন্স পাইনা।
- জিক্সারের পিলিয়ন সিট টা তেমন সুবিধার না।
বাইকটি দিয়ে আমার সর্বোচ্চ ভ্রমন চুয়াডাঙ্গা থেকে কক্সবাজার ৭৫০ কিলোমিটার খুব সহজ ভাবেই ট্যুর টা দিছিলাম হাইওয়ে তে বাইকের পারফরম্যান্স সেরা ছিলো, আমরা অবশ্য গ্রুপ নিয়ে গেছিলাম, যাওয়ার পথে আরিচা ফেরি ঘাট ও ঢাকার পরে কুমিল্লা তে তার পর কক্সবাজারে রেস্ট নিছিলাম এভাবেই ট্যুর সম্পুর্ন করি।
আসলে বাইক নিয়ে বলতে গেলে শেষ হবে না যদি কেউ বাইক নেওয়ার চিন্তা ভাবনা থাকে তাহলে অবশ্যই সাজেস্ট করবো সুজুকি কোম্পানির বাইক নিতে কারন এর পারফরম্যান্স অতুলনীয় ।
জিক্সার নিয়ে বললে শেষ করা যাবে না, শেষ মুহুর্তে কিছু কথা না বললেই নয় কারন বাইক নিয়ে অবশ্যই সচেতন ভাবে রাইড দিতে হবে ওভার কনফিডেন্স নিয়ে বাইক চালানো যাবে না এবং সবসময় সেফটি গিয়ার পরিধান করে বাইক চালাতে হবে। ধন্যবাদ ।