New Suzuki Gixxer ৫০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - আরিফ
This page was last updated on 20-Nov-2023 05:05pm , By Shuvo Bangla
আমি মোঃ আরিফ হাসনাত । আমি ইন্টার ২য় বর্ষে পড়াশোনা করি , আমার বাসা তেতুলিয়া । আমি এখন আমার জীবনের প্রথম বাইক New Suzuki Gixxer এর সাথে আমার রাইডিং অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।
New Suzuki Gixxer ৫০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - আরিফ
আমার জীবনের প্রথম বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা হয় আব্বুর ১২৫ সি সির বাইকে যেটা ছিলো আমার আব্বুর, আব্বুর সাথেই প্রথম বাইক চালানো শিখেছি, আব্বু প্রতিদিন বাইকটি নিয়ে অফিসে যেত আর আমি অপেক্ষা করতাম আব্বু কখন বাসায় আসবে আর বাইকটি একটু চালাবো ।
তখন ২০২২ সাল আব্বু বুঝতে পারলো আমার বাইক চালানোর বেশ ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে আমি তখন কলেজে ২য় বর্ষের ছাত্র । ২১ কিলোমিটার বাসে করে প্রতিদিন কলেজে যেতাম, বাবা হঠাৎ আম্মুকে বললো আমাকে বাইক কিনে দিবে আমি শুনার পর অনেক খুশি হলাম, আব্বু জমানো টাকা এবং আমার জমানো কিছু টাকা দিয়ে বাইকটি কিনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় ।
অবশেষে ২০২২ সালের ১৫ মার্চ আমার জীবনের প্রথম বাইকটি কিনতে সক্ষম হই , বাইকটি রঙ লাল এর ,দাম নিয়েছিলো ২ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা । বাইকটি কিনতে আমি আমার আব্বু আমার ছোট বোন সাথে গেছিলো, আমার বাসা থেকে সুজুকি বাইকের শোরুম ২৫ কিলোমিটার দূরে , পঞ্চগড় থেকে বাইকটি ক্রয় করি ।
প্রথম দিনই ২০ কিলোমিটার বাইকটি রাইড করি । সত্যি বলতে আমার স্বপ্ন টাকে যখন আমি বাস্তবে চালাচ্ছিলাম মনের ভেতরে এতো শান্তি পেয়েছি যা বলে বুঝানোর মতো না । বাইকে প্রথম ৫০০০ কিলোমিটার আমি ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন করি খুব সুন্দর ভাবে ৪ বার ইঞ্জিন অয়েল এবং অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করি ।
4000 আর পি এম রেখে ব্রেক ইন পিরিয়ড এর সময় 45 মাইলেজ পাইতাম কিন্তু তার পরে 50+ এখন বাইকে ৫০০০ কিলোমিটার সেইম পারফর্মেন্স পাচ্ছি। বাইকের ব্রেকিং , কর্নারিং, স্মুথনেস অবাক করার মতো। বাইক নিয়ে ডে ট্যুর দিয়েছি ৪০০ কিলোমিটার ।
লং ড্রাইভে এখনো যাওয়া হয় নাই ইনশাল্লাহ খুব তাড়াতাড়ি যাব ইচ্ছা আছে ৬৪ জেলা ঘুরে বেড়ানোর , বাইকের কন্ডিশন এতো ভালো পাইছি একটু ও কষ্ট বোধ মনে করিনি বাইক টি আসলেই অনেক সুন্দর।
সিটি তে সর্বদা ৫০+ মাইলেজ পাই হাইওয়ে তে ৫৫+। বাইকের টপ স্পিড চেক করছিলাম ১২৩ আমি সিঙ্গেল থাকা অবস্থায় পেয়েছি এখনো পাই। এখন পর্যন্ত নতুন লাগিয়েছি ইমারজেন্সি সুইচ , চাকায় জেল দিয়েছি কিছু স্টিকার মডিফাইড করেছি , আল্লাহর রহমতে কোনো এক্সিডেন্ট হয়নি ।
আসলে বাইটিতে এবিএস থাকার কারনে কন্ট্রোলিং অনেক ভালো, আসলে যখন বাইক নিয়ে বের হই তখন কিক দিয়ে ইঞ্জিন 5 মিনিট হিট করে রাখি তার পর রোডে বের হই বাইকের পারফরম্যান্স দিন দিন আমাকে মুগ্ধ করেই যাচ্ছে । আমার বাইকটি নিয়ে ইচ্ছা আছে ৬৪ জেলা ঘুরে বেড়াবো একদিন ইনশাল্লাহ ।
বাইকে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রব্লেম পাইনি , বাইকে বৃষ্টি কাদা লাগলে তখনি ধুয়ে ফেলি, সব সময় অকেটেন ব্যাবহার করি, আর মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি যার দাম ৫৪০ টাকা । ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ব্যবহার করি , বাইকে অফিসিয়াল ভাবে ৩ বার সার্ভিস করানো হয়েছে ।
৫০০ কিলোমিটার , ২৫০০ কিলোমিটার , ৫০০০ কিলোমিটার ,পর পর সার্ভিস করিয়েছি । বাইক রাইড দেওয়ার সময় সার্টিফাইড হেলমেট ব্যাবহার করি যেটা নিজের সেফটির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।
New Suzuki Gixxer বাইকের কিছু ভালো দিক -
- বাইক দিয়ে দূর দূরান্ত যাবতীয় সকল কাজে ব্যবহার করা যায়।
- বাইক আসলে ফ্যামিলির অনেক প্রয়োজনে ব্যবহার করে সুবিধা পাই ।
- লুকিং গ্লাস ও হ্যান্ডেল বার অনেক সুন্দর।
- বাইক দিয়ে খুব অল্প সময়ে যেখানে সেখানে যাওয়া যায় ।
- ব্রেকিং সিস্টেম চমৎকার।
- কর্নারিং , ব্যালেন্সিং ভালো ।
New Suzuki Gixxer বাইকের কিছু ভালো দিক -
- লং রাইডে ব্যক পেইন হয়।
- বাইকটি সিংগেল ডিক্স হওয়ার কারনে ড্রাম ব্রেক এ তেমন কনফিডেন্স পাইনা ।
- হেডলাইট তেমন সুবিধার না লাইট অনেক কম আর একটু বেশি হলে ভালো হতো ।
- বাইক এ মাইলেজ মাঝে মাঝে কম পাই ।
- বাইক অনেক সময় মৃত্যুর কারন হয়ে দাঁড়ায় ।
বাইক নিয়ে এখন পর্যন্ত বেশি দূরে যেতে পারিনি কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি যাব । আসলে বাইক নিয়ে বলতে গেলে শেষ হবে না যদি কেউ বাইক নেওয়ার চিন্তা ভাবনা করে থাকে তাহলে অবশ্যই সাজেস্ট করবো Suzuki কোম্পানির বাইক নিতে । কারন এর পারফরম্যান্স অতুলনীয় , বাজেট হিসেবে আমার কাছে একটু বেশি মনে হয়েছে কিন্তু তবু ও বাইকটি অনেক ভালো যা বলে শেষ করা যাবে না ।
শেষ মুহুর্তে কিছু কথা না বললেই নয় কারন বাইক নিয়ে অবশ্যই সচেতন ভাবে রাইড দিতে হবে ওভার কনফিডেন্স নিয়ে বাইক চালানো যাবে না এবং সবসময় সেফটি গিয়ার পরিধান করে বাইক চালাতে হবে। ধন্যবাদ ।