New Suzuki Gixxer ১৩,০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - মিলন
This page was last updated on 18-Nov-2023 01:42pm , By Shuvo Bangla
আমি এমদাদুল হক মিলন। আমি একটি New Suzuki Gixxer ২০২১ মডেলের রেড বাইকটি ব্যবহার করি । আজ আমি আমার বাইকটি নিয়ে আমার রাইডিং অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ।
New Suzuki Gixxer ১৩,০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - মিলন
আমার বাসা ময়মনসিংহ জেলা, পড়ালেখা এবং চাকুরীর সুবাদে এখন ঢাকায় বসবাস করছি । আমি জীবনে প্রথম বাইক চালানো শিখি আমার বাবার টিভিএস মেট্রো ১০০ বাইকটি দিয়ে।
বর্তমানে আমি এই বাইকটি ব্যবহার করছি। আজ আমার এই বাইকটির ব্যপারে আপনাদের সাথে বিশেষ কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।
বাইক চালানো শিখেছি আমার এলাকার বড় ভাই সারোয়ার জাহান এর হাত ধরে। তখন TVS 100cc বাইক দিয়ে সারোয়ার ভাই এর হাত ধরে আমি বাইক চালানো শিখি। ভালোভাবে বাইক চালানো শিখতে সময় লাগে ৭ দিনের মত। তখন থেকে একটু একটু সময় নিয়া চালাতে চালাতে হাত পাকা হয় ।
কিছু দিন পরে হঠাৎ করে আমার বাবাকে বাইক কিনে দেয়ার কথা বলি কিন্তু করোনার কারনে তা হয়ে উঠেনি। পরে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সুজুকির শোরুম থেকে বাইকটি ক্রয় করি।
সুজুকি জিক্সার বাইকটি ক্রয় করি ময়মনসিংহ এম এম মটরস হতে। বাইকটি ক্রয় করি ২,২৫,০০০ টাকায় এবং রেজিস্ট্রেশন সহ আরো ১১০০০ হাজার টাকা খরচ হয় যার মধ্য ৮০০০০ টাকা আমার নিজের উপার্জিত । বাইক এভেইলেবল না থাকায় রেড বাইকটি ক্রয় করি।
আমি যখন ফোন দিলাম বাইক নেওয়ার জন্য। বললাম আমার জন্য বাইক নিবো। তখন তারা বললেন চলে আসো। বাইকটি ভালোলাগার প্রথম কারন জাপানি প্রযুক্তি। বাইকটি বেশী দিন হয়নি বাজারে আসছে তখন। বিষয়টি খুব ভালো লাগে আমার। আমি একটা চাকরি করি। সবদিক বিবেচনা করে আমার বন্ধু এবং বড় ভাইদের সাথে কথা বলার পর, বললো বাইকটি খুব ভালো হবে মনে হয়। এই চিন্তা করে আমি আর আমার খালাতো ভাই সুজুকি শোরুমে চলে গেলাম।
বাইক দিয়ে দেশের সকল সৌন্দর্য্য খুব কাছাকাছি থেকে উপভোগ করা যায়। এবং যেখানে সেখানে যাতায়াত করা যায়। তাই বাইক রাইডিং আমি অনেক ভালবাসি। বাইকটির কালার, লুক, ডিজাইন, এবং পার্ফমেন্স দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে যায়।
বাইকটি আমি যেদিন কিনতে গিয়েছিলাম সেদিন কি যে আনন্দ লাগছিল আমার। তা আমি কাউকে বলে ভাষায় প্রকাশ করতে পারবনা। আসলে সত্যি বলতে ছোট বেলা থেকেই বাইকের প্রতি অগাধ ভালো লাগা কাজ করত। তাই মূলত বাইক চালাই।
আমার কাছে মনে মনে হয়, এই সেগমেন্টের সেরা একটি বাইক চালাচ্ছি। ৩৫০০ কিলোমিটার এর আগে মাইলেজ পেতাম ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটারের মত প্রতি লিটারে। ৩৫০০ কিলোমিটার অতিক্রম করার পর, প্রতি লিটারে ৪৩ থেকে ৪৫ মাইলেজ পাচ্ছি।
প্রথমে ইঞ্জিন অয়েলটি ব্যবহার করি 20w40 গ্রেড এর শোরুম থেকেই পরিবর্তন করি। এরপর Shell 20w40 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েলটি বাহিরের দোকান থেকে কিনে ব্যবহার করতাম। তার পর অন্য ব্রান্ড এর ইঞ্জিন অয়েল কিছু দিন ব্যবহার করেছি। বর্তমানে হ্যাভোলিন 20w40 ব্যবহার করছি।
আমার বাইকে ইঞ্জিন অয়েল ৯০০ মিলি গ্রাম দিয়ে থাকি। দীর্ঘ সময় ব্যবহার করে থাকি। তার পর থেকে মনে হচ্ছে বাইকের সাউন্ড অন্য রকম হয়ে যাচ্ছে। তার পর তাকে বাদ দিয়ে, এখন আমি Shell advance 20W40 ব্যবহার করতেছি। দাম ৪৫০ টাকা । তবে বাইকের সাউন্ড এখন আগের থেকে পরিবর্তন হচ্ছে বলে মনে হয়।
সামনের চেইন স্পোকেট ১ বার পরিবর্তন করি। সামনের চাকার হাইড্রোলিক ব্রেক সু সেট পরিবর্তন করি একবার। বল রেসার পরিবর্তন করি একবার। এয়ার ফিল্টার ৬ বার পরিবর্তন করেছি।
অয়েল ফিল্টার প্রতি ২ হাজার কিলোমিটার পরপর পরিবর্তন করি। বাইকটিতে পর্যাপ্ত আলো থাকায় কোনো ফগ লাইট লাগানো প্রয়োজন হয় নি। বাইকটিতে আমি ১১৮ পর্যন্ত গতি তুলতে পেরেছি। টপ স্পিডে ব্রেকিং, ব্যালেন্সিং খুব ভালো ছিল ।
New Suzuki Gixxer বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- সাসপেনশন খুব হার্ড।
- পিলিয়ন সিট খুব শক্ত।
- ব্রেকিং আরো ভালো দরকার ছিল।
- বডি কিট কিছু দূর্বল মনে হয়।
- গিয়ার সিফটিং হার্ড।
- সাউন্ড নষ্ট হয় দ্রুত ।
New Suzuki Gixxer বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- লুক অসাধারণ।
- বডি কালার, ডিজাইন অনেক ভালো।
- প্রচন্ড রেডি পিকাপ আছে।
- কন্ট্রোলিং অনেক অনেক ভালো।
- মাইলেজে আমি সন্তুষ্ট।
বাইকটি দিয়ে বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করি , ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, টাঙ্গাইল, নেএকোনা,মুন্সিগঞ্জে,কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, সাভারসহ ঢাকার বিভিন্ন অলি গলি এবং আরো অনেক নাম না জানা জায়গা ভ্রমণ করি ।
বাইকটির বিশেষ আকর্ষণ হলো আমি ১৩,০০০ কিলোমিটার অতিক্রম করার পরও পারফরম্যান্স কমে নি , কিন্তু সবচেয়ে মজার বিষয় হল কোনদিন পাংচার হয় নাই। আরও একটি ব্যপার হলো এই ১৩,০০০ হাজার কিলোমিটার রাইডের মধ্যে মাত্র একবার ফুল সার্ভিস করি। তাও আবার ঢাকার বাইকার্স সলুশন হতে।
বাইকটির ব্যপারে আমার অলমোস্ট কোন অভিযোগ নেই। বাইকটির পারফরম্যান্সে আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। এই ছিল আমার বাইকের ০১ বছর বয়সে ১৩,০০০ + কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার অভিজ্ঞতা যা আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।
ধন্যবাদ।