LIFAN KP165 4V ১১ তম বাইকের মালিকানা রিভিউ - অনিম সরকার
This page was last updated on 30-Jul-2024 12:58pm , By Shuvo Bangla
আমি অনিম সরকার । আজ আমি আপনাদের আমার LIFAN KP165 4V বাইক নিয়ে ৫০০ কিলোমিটার রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। বাইকটি আমি ঈদের কিছুদিন আগে ক্রয় করি ।
এই বাইকের আগে আমার MT-15 ইন্ডিয়ান বাইকটা ছিল। আর এই KP 4V আমার ১১ তম বাইক। যদিও এই ৫০০ কিলোমিটারে বাইকের খুঁটিনাটি বুঝা সম্ভব নয় তাও এই ৫০০ কিলোমিটারে আমার কাছে পার্সোনালি লিফান এর এই বাইকটির যেসব বিষয় ভালো বা খারাপ লেগেছে সেগুলো শেয়ার করবো।
LIFAN KP165 4V বাইকের ভালো বিষয় সমূহ -
ইঞ্জিন পাওয়ার :
এই বাইকের প্রতি আমার সবচেয়ে বেশি ভালোলাগা কাজ করে যেটা সেটা হলো এর ইঞ্জিন পাওয়ার। আমার কাছে এখন পর্যন্ত অন্য কোন ন্যাকেড স্পোর্টস বাইকের পাওয়ার এটার মতো মনে হয় নি। আমি GSXS ও চালিয়েছি কিন্তু সেটার পাওয়ার আউটপুট ও এটার মতো এতো ব্রুটাল না। যদিও আমার বাইকটি এখনো ব্রেক ইন পিরিওডে আছে তাও এই অবস্থাতে এটার যে পাওয়ার ডেলিভারি সেটা সত্যি ই অসাধারণ।
ব্রেক ইন শেষ হলে (১০০০ কিলো মানবো) আর কয়েকটা সার্ভিস এর পর এটার performance আরো দুর্দান্ত হবে বলে আশা করি। আপনি এটার যে কোন গিয়ারেই যে কোন RPM এই এটার টর্ক টা পাবেন। ধরেন আপনি ৪০-৫০ এ ৬ গিয়ারে আছেন এখন সামনে কোন বাস বা ট্রাক কে আপনি ওভারটেক করবেন, তাহলে আপনি যাষ্ট পিকাপ দিবেন আর সাথে সাথে বুলেটের গতিতে বের হয়ে যেতে পারবেন। এটার জন্য গিয়ার ড্রপ করা লাগবে না।
ব্রেকিং ও ব্যালেন্সিং :
এই বাইকের ব্রেকিং অসাধারণ। ডুয়েল ABS, Radial টায়ার ও USD সাসপেনশন এর জন্য বাইকটির ওভারঅল ব্রেকিং ফিডব্যাক খুবই ভালো। বালু, কাদা কোথাও কনফিডেন্স ড্রপ করে না। কিনার আগে অনেক YouTuber এর থেকে এটার ব্রেকিং নিয়ে অনেক নেগেটিভ কথা শুনেছি কিন্তু বাস্তবে পুরো উল্টো। আমার কাছে এটার সামনের ABS আর ব্রেকিং টা আমার MT-15 এর চাইতে ভালো মনে হয়েছে।
আর যখন সামনের ব্রেক জোরে ধরা হয় তখন সামনের USD টা খুব সুন্দর ফিডব্যাক দেয়। মনে হয় যেন বাইকের মাথাটা একদম Suspension এর ভিতর ঢুকে যাচ্ছে। আর এই বাইকটির ওয়েট বেশ ভালোই। ১৫৩ কেজি এর মতো। কিন্তু ওয়েট ডেসট্রিবিউশন অসাধারণ তাই আপনার কাছে এটার ওজন টা ফিল হবে না আর হাইওয়েতে যথেষ্ট স্ট্যাবল রাখে।
ডিজাইন :
যদিও এটা এক এক জনের এক এক রকম পছন্দ তবুও এটার ডিজাইন আর কালার কম্বিনেশন আমার কাছে ভালো লেগেছে। এটার বিল্ড কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো।
মাইলেজ :
আমি এখন পর্যন্ত ৩৫-৩৬ এর মতো পাচ্ছি মাইলেজ। যদিও মাইলেজ নিয়ে প্যারা নেই আমার তাও এতো পাওয়ারফুল বাইকের থেকে এমন মাইলেজ খারাপ না আমার মতে।
টায়ার :
এই বাইকে CST এর Radial টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে যেটার কোয়ালিটি যথেষ্ট মানসম্মত এবং ভালো রোডে বেশ ভালো গ্রিপ দেয়। যদিও বালু বা কাঁদায় গ্রিপ একটু কম দেয় কিন্তু এর মানে এই নয় যে উল্টায় পরবেন।
গিয়ার বক্স :
আমার ব্যবহার করা বাইকগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে স্মুথ গিয়ার বক্স পেয়েছি এই KP 4V তে ।
LED ইন্ডিকেটর :
এটার LED ইন্ডিকেটর লাইটের পাওয়ার ভয়াবহ রকমের তীব্র। আপনার চোখের জ্যোতি ভালো থাকলে আপনি হেডলাইট অফ করে যাষ্ট এই LED ইন্ডিকেটর এর আলো দিয়েই চলতে পারবেন ।
LIFAN KP165 4V বাইকের খারাপ বিষয় সমূহ -
এটার সামনের Master cylinder টা ভালো না তেমন। বাইক থামবে কিন্তু Master cylinder এর জন্য বাইটটা একটু কম ফিল হয় আর পিছনের ABS টা সামনের টার মতো অতো ভালো না। তার মানে এটা নয় যে পিছনের টা কাজের না, জোরে ধরলে পল্টি খাবেন। সর্বোচ্চ একটা হালকা স্কিড করে পান্চ ব্যাক করবে এই আরকি।
Front abs: 9/10
Rear abs: 5.5/10
আমি পরবর্তি তে সামনে পিছনে ২ টাতেই CBR এর caliper ব্যাবহার করবো। সামনের master cylinder RCB S1 আর পিছনে CBR এর টা লাগাবো।
ট্রিপ মিটার নাই । এটার মিটার অসাধারণ কিন্তু এটায় কোন ট্রিপ মিটার অপশন নেই! টোটাল ODO থেকে ছবি তুলে রেখে আপনাকে মবিলের হিসাব রাখা লাগবে।
এই বাইকের Riding Footrest টা একটু পিছনে দেওয়া উচিত ছিল। এটার পিছনের Suspension শক্ত মোটামুটি। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ অনিম সরকার