Honda X-Blade 160 আমার জন্য পার্ফেক্ট একটি বাইক -মুন্না
This page was last updated on 15-Jul-2024 05:09pm , By Raihan Opu Bangla
আমি মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসাইন চৌধুরী মুন্না। আমি চট্টগ্রামে বসবাস করি । জন্ম চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার অন্তর্গত রায়পুর গ্রামে, থাকি চট্টগ্রাম শহরে। আমি একটি Honda X-Blade 160 বাইক ব্যবহার করি । বাইকটি বেশ কিছু দিন হয়েছে আমি ক্রয় করেছি আজ আমার এই Honda X-Blade 160 বাইকের ব্যাপারে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
Honda X-Blade 160 আমার জন্য পার্ফেক্ট একটি বাইক
ছোট বেলা থেকেই বাইকের প্রতি দূর্বলতা ছিল আর সেটা এখনো আছে। আমার ভাই এর হোন্ডার রোড মাস্টার সিডি 200 বাইক ছিল যা দেখে বাইকের প্রতি দুর্বলতা আরও বেড়ে যেত।
১৯৯৪ সালে মামাত ভাই এর Yamaha 100cc বাইক দিয়ে বাইক চালানো শিখি। এর পরে Honda H100S, Honda CDI H100, Honda Roadmaster CD200 Escorts 100cc, Yamaha Rx. Jialing 90cc, Yamaha YBR, Pulsar, Hero Honda Hunk, Hero Honda Passion, TVS, Hero Honda Glamour 125cc চালাই।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী চালানো হয়েছে Honda CDI H100 প্রায় ৫০,০০০ কিলোমিটার এবং Hero Honda Glamour 125cc ৭০,০০০ কিলোমিটার, বাইকটি এখনো আছে । গত সেপ্টেম্বর ২০২০ Honda X-Blade 160 বাইকটি কেনার অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ ছিল। কারন Honda Showroom এ বাইক ছিল না। পনের দিন অপেক্ষার পর প্রিয় বাইকটি অনেক কষ্টে BHL এর মাধ্যমে আমি পেলাম।
চট্টগ্রামের বিনিং এন্ড কোং থেকে ১,৭২,৯০০ টাকা দিয়ে Honda X-Blade 160 বাইকটি কিনি। যদিও আমার আর্মি গ্রীণ কালারটা পছন্দ ছিল। কিন্তু আমার ছেলের পছন্দ লাল। তাই ওর পছন্দেরটাই নিলাম।
Click To See Honda X-Blade 160 First Impression Review In Bangla – Team BikeBD
বাইকের পিকআপ, সিটিং কমফোর্ট, ইঞ্জিন স্মুথনেস অসাধারণ। বাইকের লুক যে দেখবে সেই প্রেমে পড়বে। হেড লাইট, টেল লাইট, হেজার্ড সুইচ মাস্কুলার ট্যাংক প্রস্থ সিট সব মিলিয়ে Honda X-Blade 160 বাইকটি যে কোনো বাইক লাভার্স পছন্দ করবে।
তাহলে আমি কিভাবে বাদ যাই। Honda X-Blade 160 বাইকটিকে নেকেড স্পোর্টস বা কমিউটর যাই বলিনা কেন, এই সেগমেন্ট এর বাংলাদেশের সব চেয়ে সুন্দর বাইক। ১৬২.৭১ সিসির কোনো বাইকে ৫০+ মাইলেজ পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু Honda X-Blade 160 রাইডার ভেদে ৫৫+ মাইলেজ পাচ্ছে।
Honda X-Blade 160 বাইকে ব্যবহার করা হয়েছে Hornet এর সেইম ইঞ্জিন। তবে X Blade এর ইঞ্জিন Honda Cb Hornet 160 এর ইঞ্জিন থেকে আরও বেশি স্মুথ করার ফলে ইঞ্জিন সাউন্ড অসাধারণ। ব্রেকিং ডিপেন্ড করে রাইডার এর দক্ষতা এবং চালানোর উপর। আমি ভাল খারাপ মিলিয়ে শহর থেকে গ্রামে এবং পাহাড়ের রাস্তায় ২১০০ কিলোমিটারে কখনও চাকা স্কীড করেনি।
অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি এই বাইকের সিটিং পজিশন অনেক কমফোর্ট তাই লং ট্যুরে ব্যাক পেইন বা হাতের কবজিতে ব্যাথা হয় না। পিলিয়ন সিটের পজিশন অনেক আরামদায়ক । পিলিয়ন সিটের ব্যাপারটি আমার সহধর্মিনীর থেকে শোনা ।
এই সেগমেন্ট এর অন্য বাইকের তুলনায় Honda X-Blade 160 এর দাম অনেক কম। অন্য কোম্পানির সেইম বাইক যেখানে ২,৪০,০০০ এর উপরে সেখানে ১,৭২,৯০০ টাকা দিয়ে Honda X-Blade 160 ভ্যলু ফর মানি। সামনের চাকা ১০০ আর পিছনে ১৪০ হলে আরো ভালো হতো। আরও কনফিডেন্স পেতাম। যদিও বতর্মান চাকাও আমার জন্য কোনো সমস্যা নয়। সবাই বলে তাই বললাম।
পেইন্ট কোয়ালিটি আরো ভাল হতে পারত। কেন যে ইদানিং সব বাইকের পেইন্ট কোয়ালিটি এত খারাপ করে কোম্পানিই ভাল বলতে পারবে। হেড লাইটের আলো ঠিক আছে। কিন্তু হাইওয়ের জন্য ঠিক নাই। বাইকটিতে এই দামে এবিএস না দিলেও অন্তত সিবিএস দেওয়া যেত।
Honda X-Blade 160 বাইকের কিছু ভালো দিক -
- লুক
- মাইলেজ
- ইঞ্জিন
- ব্রেকিং
- সিটিং পজিশন
- দাম
Honda X-Blade 160 বাইকের কিছু খারাপ দিক-
- চিকন চাকা
- পেইন্ট কোয়ালিটি
- হেড লাইটের আলো হাইওয়েতে কম
- ব্রেকিং CBS অথবা ABS দিলে আরো ভালো হতো
- কিছু কিছু প্লাস্টিক খুব ভালো আর কিছু খুবই নিম্নমানের
আমি সকালে বাইক স্টার্ট দেই কিক দিয়ে এবং ২-৩ মিনিট স্টার্টে রাখি। ইঞ্জিন হালকা গরম হওয়ার পরে বাইক বের করি। প্রতি সপ্তাহে একবার চেইন ক্লিনার দিয়ে চেইন ক্লিন করি এবং চেইন লুব ব্যবহার করি।
যেহেতু বাইক এখনও নতুন তাই Honda bike bd কোম্পানির 10W30 গ্রেড এর মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি। প্রতি সপ্তাহে একবার বাইক ওয়াশ করি যদি প্রয়োজন হয়। না হলে নিয়মিত মাইক্রো ফাইবার কাপড় দিয়ে পরিস্কার করি । চাকায় হাওয়ার প্রেশার সামনে ২৫ এবং পিছনে ৩২ মেনটেইন করি। এখনো টায়ার জেল দেইনি। আলহামদুলিল্লাহ্ এখনো কোনো পার্টস পরিবর্তন করতে হয়নি।
স্টিকার মডিফাই ছাড়া আর কোনো মডিফাই করিনি। চট্টগ্রাম থেকে রাঙ্গামাটি , কাপ্তাই হয়ে চট্টগ্রাম একটি লং ট্যুর দিয়েছি । দশটি Honda X-Blade 160 নিয়ে মোট ১৪ জন ছিলাম। রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই রোড এক কথায় অসাধারণ। হাইওয়েতে এই বাইকের পার্ফরমেন্স অসাধারন । আমাদের মত মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের দেশে ১,৭২,৯০০ টাকায় ১৬০ সিসি সেগমেন্ট এর বাইক একটি বিশাল পাওয়া।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে Honda X-Blade 160 নিয়ে হ্যাপি। কোনো বাইকই সয়ংসম্পূর্ণ নয়। যে যেটাতে মানিয়ে নিতে পারে তার জন্য সেটিই বেস্ট বাইক। আমার জন্য Honda X-Blade 160 বেস্ট বাইক। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসাইন চৌধুরী মুন্না
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।