Benelli 165S ৬,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - শাহাদাত এসকে
This page was last updated on 31-Jul-2024 12:18pm , By Ashik Mahmud Bangla
আমি শাহাদাত এসকে। আমি ময়মনসিংহ থাকি। বর্তমানে আমি Benelli 165S বাইকটি ব্যবহার করি। আজকে আপনাদের বেশ কিছু তথ্য জানাবো আমার Benelli 165S বাইকটির সম্পর্কে।
Benelli 165S ৬,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - শাহাদাত এসকে
আমি এর আগে Yamaha FZS V2 ব্যবহার করেছি। তার পরে Lifan KPR 165 FI NBF ব্যবহার করেছি। কিন্তু আমার আগ্রহ ছিল নেকেড স্পোর্টস বাইকের প্রতি। একটু আনকমন কিছু চাচ্ছিলাম। পেয়ে গেলাম Benelli 165S । আনকমন বলতে এই বাইকে লুকস আমার খুবই ভালো লেগেছে এবং তার সাথে ৩টি স্পার্ক প্লাগ, লিকুয়েড কুল , চারটি ভাল্ব, EFI ইঞ্জিন, ৬টি গিয়ার। এই দামের মধ্যে সবথেকে আপডেটেড বাইক বলা যায় এটিকে।
আমি এই Benelli Bike টি কিনেছি ৮ মাস আগে। এই আট মাসে বাইকটি ৬০০০+ কিলোমিটার রাইড করেছি। এর মধ্যে বেশির ভাগ সময় শহরের ভেতরেই রাইড করেছি এবং তার সাথে কিছু ভ্রমণ ও করেছি। সবচেয়ে লম্বা ভ্রমণ ছিল ময়মনসিংহ থেকে কক্সবাজার। সেই সকল অভিজ্ঞতা থেকেই আজকে আপনাদের জানাবো আমার বাইকটির ব্যপারে।
এই বাইকের ১৬৪.৭ সিসি ইঞ্জিন এবং ইঞ্জিন থেকে ১৮ পিএস শক্তি উৎপাদন করে যা এই বাইকের জন্য যথেষ্ট। এই বাইকটির ওজন ১৪৭ কেজি। এই ওজন এর জন্য কন্ট্রোলিং খুবই ভালো এবং হাই স্পিড এ খুব ভালো স্টেবল থাকে। সামনে ২৬০ মিলিমিটার এবং পিছনে ২৪০মিলিমিটার ডিস্ক ব্রেকের সাথে রয়েছে সিবিএস। এইজন্যে হাই স্পিডেও ব্রেকিং এ কনফিডেনস পাওয়া যায়।
তবে পিলিয়ন নিয়ে রাইড করলে রাইডার এবং পিলিয়ন ২ জনেরই কম্ফোর্ট কমে যায়। তবে সিংগেল রাইডের জন্য খুব আরামদায়ক। টার্নিং রেডিয়াস বেশ ভালো। কর্নারিং এ বেশ কম্ফোর্ট । ৬ হাজার আরপিএম এর পরে কিছুটা ভাইব্রেশন ফিল করি। পিছনের ১৩০ সেকশন টায়ার । LED লাইট , LED ইন্ডিকেটর, ডিজিটাল স্পিডো মিটার, CBS ব্রেকিং সিস্টেম। ২ টি টায়ার টিউবলেস । ইঞ্জিনের পাওয়ার ডেলিভারি খুব ভালো ।
Benelli 165S এর ভালো দিকঃ
- বাইকটির প্রথম ভালো দিক হচ্ছে এর পাওয়ার
- ১৪৭ কেজি ওজনের জন্য কন্ট্রোলিং খুবই ভালো এবং হাই স্পিড এ খুব ভালো ভাবে স্টেবল থাকে
- এই বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম অসাধারণ
- রাইডিং সিট খুবই আরামদায়ক। লং রাইডে সমস্যা হয় না
- সাসপেনশন ফিডব্যাক খুবই ভালো
- বাইকটা বাংলাদেশের সবথেকে দ্রুত গতি উঠাতে পারা বাইক গুলোর মধ্যে একটি
বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- পিলিয়ন সিট আরো একটু বড় করা উচিত ছিল
- রেডিয়েটরে কোনো গার্ড নেই। এটি আলাদা ভাবে কিনে লাগাতে হয়
- স্পেয়ার পার্টস এর দাম একটু বেশি
- একটি হর্ণ দেওয়া হয়েছে যার সাউন্ড পর্যাপ্ত নয়
- ফুয়েল টেংক ১০ লিটার যা ভ্রমনের জন্য একটু ছোট।
সার্ভিসিংঃ
এই ৬০০০ কিলোমিটারে মেজর কোনো সার্ভিসের প্রয়োজন হয়নি। এখনো ফ্রি সার্ভিস চলছে। তাই ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন ছাড়া আর কোনো খরচ লাগেনি। ইঞ্জিন অয়েল ১ লিটার ব্যবহার করতে হয়।
মাইলেজঃ
শহরের ভেতরে মাইলেজ পেয়েছি ৩৮-৪০ কিলোমিটার প্রতি লিটারে। হাইওয়েতে রাইডে মাইলেজ পেয়েছি ৪়৫+ কিলোমিটার প্রতি লিটার। যা আমার কাছে ভাল ই মনে হয়েছে।
টপস্পিডঃ
এই বাইকে এই পর্যন্ত টপস্পিড পেয়েছি ১৪৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। এটি পেয়েছিলাম কক্সবাজার যাওয়ার সময় ঢাকা - চট্টগ্রাম হাইওয়ে তে। ০-১০০ কিলোমিটার গতি উঠাতে সময় লাগে মাত্র ১১ সেকেন্ড।
মডিফিকেশনঃ
- সামনে ও পিছনের চাকায় দুটি ফগ লাইট লাগিয়েছি
- পেছনের নাম্বার প্লেট হোল্ডার খুলে ফেলেছি
- কিছু স্টিকার মডিফাই করিয়েছি
- লুকিং গ্লাস পরিবর্তন করেছি
- হ্যান্ডেল পরিবর্তন করে Benelli TNT 150 এর হ্যান্ডেল লাগিয়েছি আরো একটু প্রশস্ত করার জন্য।
লং ট্যুরঃ
এই বাইকে প্রথম লং ট্যুর ছিল ময়মনসিংহ- কক্সবাজার। ৩ দিনে ১৩০০+ কিলোমিটার চালিয়েও কোনো সমস্যা পাইনি। লিকুইড কুল ইঞ্জিন হওয়ায় ইঞ্জিন হিটিং নিয়ে কোনো সমস্যা হয় নাই।
এর পরে ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুর একটি শর্ট ট্যুর দিয়েছিলাম। সেটিও খুবই সুন্দর ভাবে সমস্যা ছাড়াই সম্পন্ন হয়। এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি ট্যুর দিয়েছি।
এই বাইকে শেষ ট্যুর ছিল ময়মনসিংহ থেকে শেরপুর মধুটিলা ও গজনী। একটি পাহাড়ি পরিবেশের আঁকাবাঁকা রাস্তায় কর্নারিং করে খুবই মজা পেয়েছি। এর ১৩০ সেকশন রেয়ার টায়ারের জন্য কর্ণারিং এ ভালো কনফিডেন্স পাওয়াযায়। সর্বোপরি বলবো Benelli 165S এটি এই মূল্যে খুবই ভালো একটি বাইক। এর পারফরমেন্স এ আমি সব দিক দিয়েই সন্তুষ্ট। যদি কম দামের ভেতর একটি ভাল নেকেড স্পোর্টস বাইক চান, তাহলে Benelli 165S আপনার জন্য ভালো একটি অপশন হতে পারে। ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ শাহাদাত এসকে
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।