Bajaj Pulsar 150 বাজাজ এর সর্বোচ্চ বিক্রিত বাইক - ইব্রাহিম
This page was last updated on 28-Nov-2022 12:53pm , By Raihan Opu Bangla
শুভেচ্ছা সবাইকে, আমি মোঃ ইব্রাহিম দেওয়ান । আমার বাড়ি নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলায়। অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম আমার Bajaj Pulsar 150 নিয়ে ছোটখাটো একটা রিভিউ দিব। তাই আজ লিখে ফেললাম Bajaj Pulsar 150 ২০১৮ এডিশন নিয়ে ১৫,০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ। ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
Bajaj Pulsar 150 বাজাজ এর সর্বোচ্চ বিক্রিত বাইক
প্রথম বাইক চালানো - ছোটবেলা থেকেই বাইকের প্রতি আলাদা একটা আগ্রহ কাজ করতো। ২০১৩ সালে সর্বপ্রথম বাইক চালানো শেখার সুযোগ হয়। হঠাৎ একদিন কাকার বাইকের চাবি দিতে বলি। প্রথমে ভাবি নাই চাবি দিবে, চাওয়ার সাথে সাথে চাবি দিয়ে দেয়। ওই দিনই আমি প্রথম পালসার বাইক চালাই। তারপর ফ্রেন্ডের Bajaj Pulsar 150 ২০১৭ মডেলের বাইকটি চালাই। তখন থেকেই পালসার এর উপর একটা আকর্ষণ সৃষ্টি হয়।
বাইকক্রয় - Bajaj Pulsar 150 বাইকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এটির আউটলুক। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। আমার অল্প কিছু জমানো টাকা এবং বাবার টাকা দিয়ে। Bajaj Pulsar 150 ২০১৮ মডেলের বাইকটি কিনি ।
কালো আমার প্রিয় বাইক তাই কালো এবং লাল কালারের বাইকটি নরসিংদীর সাহেদা বাজাজ থেকে ক্রয় করি। বাইক ক্রয়ের জন্য আমি বাবা, ছোট ভাই বাজাজ এর শো-রুমে যাই। গিয়ে দেখি পালসার বাইক নাই। পরেরদিন আবার যাই এবং ৩ সেপ্টেম্বর বাইক ক্রয় করি। তখন আমার বাইকের মূল্য নিয়েছিল ১,৭৪,৫০০ টাকা।
বাইকসম্পর্কেকিছুকথা- বাইকটি সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হবে এর আউটলুকিং সম্পর্কে। প্রায় সব বয়সের মানুষ এর সাথে একটি ভালো লাগে অন্য সব বাইকের থেকে । চোখে পড়ে এর কালার নতুনত্ব।
ব্রেকইনপিরিয়ড- বাইক কেনার পর ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত নিয়ম মেনে ব্রেক ইন পিরিয়ড শেষ করি । নির্ধারিত সময়ে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি । Mobil Super 4T 20w50 গ্রেড এর ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি। প্রতি 1000 কিলোমিটার পর পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি । এ পর্যন্ত আমার বাইকটি ১৫,০০০ কিলোমিটার রাইড করেছি ।
লংট্যুর- বাইকটি দিয়ে সর্বোচ্চ একটানা 200 কিলোমিটার রাইড করেছি। ঢাকা সিলেট হাইওয়েতে। তবে বাইকের ইঞ্জিন পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। আমি কোন বিরক্ত বোধ করিনি। ট্যুরের সময় সর্বদা এই বাইকটি আমাকে সাপোর্ট করেছে। হাইওয়েতে এই বাইকের পার্ফরমেন্স বেশ ভালো । আমি এই বাইক নিয়ে লং ট্যুর গুলো বেশ ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারি ।
টপস্পিড- বাজাজ পালসার দিয়ে পিলিয়ন সহ টপ স্পিড পেয়েছি ঢাকা সিলেট হাইওয়েতে ১১২ । তবে আরও স্পিড উঠত বলে মনে হয়েছে। তাছাড়া এভারেজ 70-90 খুব স্মুথ চালানো যায় ।
মাইলেজ- পালসার 150 দিয়ে গড় মাইলেজ পাচ্ছি ৩৮-৪০ কিলো/লিটার, হাইওয়েতে মাইলেজ ৪২+ পাচ্ছি।
পার্টসরিপ্লেস- প্রথম ৮০০০ কিলো রাইড করার পর স্পার্ক প্লাগ এবং এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করেছি। বাইকটির পার্টস কোয়ালিটি খুব ভালো এবং সবখানে পাওয়া যায় । এবং পার্টস এর দাম সাধ্যের মধ্যে ।
বাইকসার্ভিস- প্রথম ১০০০ কিলোমিটার চালানোর পর বাইকের সার্ভিস করাই । এরপর ২০০০ কিলোমিটার চালানোর পর সার্ভিসিং করানো হয়। কম্পানি থেকে ফ্রি সার্ভিস গুলো সঠিক সময়ে করিয়েছি । এবং সার্ভিস গুলো করেছি নরসিংদী বাজাজ এর সার্ভিস পয়েন্ট থেকে। সার্ভিস এর মান বেশ ভালো লেগেছে ।
বাইকেরযত্ন- প্রতিমাসে গড়ে ১ দিন বাইক ওয়াস করা হয়। এবং অন্য সময় কাপড় দিয়ে ধুলাবালি পরিষ্কার করি, মাঝেমধ্যে পলিশ করি। নিজের ভালবাসার জায়গা থেকে সবসময় বাইকটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি। এবং নিয়মিত বাইকের যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করি ।
Bajaj Pulsar 150 বাইকের কিছু ভালো দিক-
- লুকিং অনেক সুন্দর
- বাইকের হর্নের শব্দ অনেক ভালো
- লং লাইফ ইঞ্জিন পারফরম্যান্স
- কন্ট্রোল খুব ভালো
- লং ট্যুর এর জন্য ভালো
Bajaj Pulsar 150 বাইকের কিছু খারাপ দিক-
- হেড লাইটের আলো কম
- গিয়ার শিফটিং একটু শক্ত
- ইঞ্জিনের সাউন্ড লং রাইডে নষ্ট হয়ে যায়
- রেডি পিকআপ কম
- সিঙ্গেল রাইট এ বাইক এর কন্ট্রোল একটু কম মনে হয়
আমি মনে করি বাংলাদেশে Bajaj মডেলের সেগমেন্টের যত বাইক সেল হয়েছে তার মধ্যে সর্বোচ্চ বিক্রিত বাইক Bajaj Pulsar 150। যা আস্থে আস্থে মানুষের আস্থা অর্জন করতে সফল হয়েছে। বাইকটি বেশ ভালো সার্ভিস দিয়ে অনেক বছর ধরে বাংলাদেশ এর মার্কেটে যথেষ্ট সুনামের সাথে আছে ।
আমি মনে করি যারা 150cc বাইক কেনার কথা ভাবছেন। তাদের জন্য পালসার 150 সিসি সব থেকে ভালো একটি বাইক হবে। সকলের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা সর্বদা হেলমেট পড়ে বাইক চালানোর চেষ্টা করবেন। সকলের কাছে আমি দোয়া প্রার্থী। ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃমোঃ ইব্রাহিম দেওয়ান
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।