Bajaj Pulsar 150 Single Disc ৩২,০০০ কিলোমিটার রাইড - শুভ
This page was last updated on 31-Jul-2024 09:28am , By Raihan Opu Bangla
Bajaj Pulsar 150 Single Disc ৩২,০০০ কিমি রাইড
আমি মো: সানজেদুর রহমান শুভ। আমার বাসা নাটোরের গুরুদাসপুর থানায়। আমি বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি এর একজন ছাত্র। আজ আমি আমার Bajaj Pulsar 150 Single Disc বাইকটি নিয়ে আপনাদের সাথে আমার ভালবাসার বাইক নিয়ে কিছু গল্পকথা শেয়ার করবো।আমি ছোটবেলা থেকেই অনেক বাইক পছন্দ করতাম কারন আমার বাবার বাইক ছিল Honsan-125 । প্রতিদিন সকালে বাবা যখন বাইক স্টার্ট দিতো তখন পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম কারন বাইকের শব্দ আর সাইলেন্সার দিয়ে বের হওয়া ধোয়া থেকে পেট্রোল এর গন্ধ খুব ভাল লাগতো।
Bajaj Pulsar 150 Single Disc ৩২,০০০ কিলোমিটার রাইড
বাবার বাইকের সামনে বসে ঘুরতে খুবি ভাল লাগতো। যাইহোক, আমি বাইক চালানো শিখি ২০১২ সালে এক বন্ধুর Dayang-80 Cc দিয়ে। তারপর থেকে মাঝে মাঝে বাবার বাইকটি চালাতাম। বাবার Discover-100 এবং Honda CB shine বর্তমানে যেইটা আছে, এখনো চালাই।
ঘুরে বেড়াতে খুবি ভাল লাগে। অজানাকে জানা বা দেখার আগ্রহ টাই বাইকিং এ আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়।তাছাড়া রক্তের সম্পর্ক ছাড়াও যে অনেক আপন ভাই পাওয়া যায়, তা বাইকিং কমিউনিটিতে না আসলে জানতে পারতাম না। যদিও এই প্লাটফর্ম এ আমি নতুন বাইকার।খুব ইচ্ছা ছিল একটা নিজস্ব বাইকের, রাস্তায় যখন আমাদের সমবয়সী ছেলেরা নিজের বাইক নিয়ে ঘুরে, আমারো ইচ্ছা হতো। যদিও বাবার আছে তারপরেও নিজের লাগবে এমন একটা জিদ কাজ করতো। আমাদের ১৫০ সিসি কোন বাইক ছিল না, তাই এইটার ওপর ই একটু টান অনুভব করতাম।
Bajaj Pulsar 150 Single Disc এর প্রতি আমার একটু আলাদা ভালবাসা কাজ করে। বেশ কয়েক বছর ধরেই বাবা কে বলতাম বাইক কিনে দেওয়ার জন্য কিন্ত কখনোই রাজি হতোনা, বলতো একটাতো আছেই।
বাইকের জন্য অনেক জিদ করছি, রাগারাগি করছি তবুও রাজি হয়নি, পরে ভাবলাম বাবারতো আছেই, চালাতে তো দিচ্ছেই পরেই না হয় কিনে দিবে। এসব ভেবে নিজেকেই শান্তনা দিয়েছি। কিন্ত যখন ভার্সিটিতে উঠলাম তখন আর উপায় না দেখে এবার গেলাম দাদুর কাছে, ব্যাস! কাজ হয়ে গেল।দাদু রাজি হয়ে গেল। দাদু আমাকে খুব ভালবাসতেন কারন একটাই নাতি।যদিও আব্বু দাদুকে না করছিল আমায় বাইক কিনে দেওয়ার জন্য। ২০২০ সালের ১লা মে, আমার সেই কাংখিত সপ্ন পুরনের দিন আসলো। কিন্ত করোনার কারনে সিমীত আকারে লকডাইন চলে, ফোন করে কয়েকটা শো-রুমে খোজ নিলাম।
বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে Bajaj Pulsar 150 Single Disc নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম কারন DD টা ব্যক্তিগতভাবে আমার ভাল লাগেনা। আরেকটা জিনিস আগে থেকেই একটু ঠিক করে নিছিলাম সেটা হলো কালার। যেহেতু লাল-কালো বাইক টা প্রায় সবার কাছেই দেখা যায়।
আমি একটু অন্যরকম টাই ভাবছিলাম, আর যেই কালার নিবো লাল-কালো বাদে নিব। তো আমি আমার ছোট কাকা ও আরো ২জন যাই শো-রুমে। অনেক গুলো কালার এর মধ্য আমার প্রথমে একটা পছন্দ হয় নীল-কালো কালার, ভাল করে খেয়াল করে দেখি ডাবল ডিস্ক।
তখন দেখতে পাই ব্ল্যাক কালারের ওপর সিলভার স্টিকার করা বাইকটা। আমার খুব পছন্দ হয়। ১,৬৯০০০ টাকা দিয়ে বাইক টা ক্রয় করি। বাইক কিনে নিয়ে বের হতেই শুরু হই বৃস্টি, কি বলাবো সেই অনুভতির কথা, ভিজতে ভিজতে সেই প্রথমবার নিজের বাইক চালানোর কথা।
ঈদের দিনের মতো আনন্দ হচ্ছিল। প্রায় ৪০ কিলোমিটার এর পথ পাড়ি দিয়ে বাসায় আসি। আমার বাইকের আমি খুব যত্ন করি। আমি খুব সুন্দরভাবে ব্রেকিং পিরিয়ড মেইন্টেন করি। নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রথম ৩টি ফ্রি সার্ভিসিং করাই এবং ১০০০/১২০০ কিলোমিটার পরপর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি।আমি 20W50 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি, সবসময় গেড মেইন্টেন করি। নিজের এলাকাতেই সার্ভিসিং করাই যখন যা প্রয়োজন। আমি এই ১ বছর ৬মাসে আমার বাইক নিয়ে ৩২,০০০ কিলোমিটার রাইড করেছি।
আমি খুবই সন্তস্ট আমার বাইকের পারফরমেন্স খুব ভালো। চেইন সেট, ক্লাস-কেবল, ফিল্টার ছাড়া তেমন কিছুই পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় নি। এখনো ৪০+ মাইলেজ পাই এবং টপ স্পিড পাই ১২৪, যদিও আমি টপ স্পিডে রাইড করা পছন্দ করিনা।
আমার ফিল নিয়ে বাইক চালাতেই বেশি ভাললাগে। Pulsar এমন একটা বাইক, যাতে সব বয়সের মানুষকেই মানায়। সবচেয়ে ভাললাগে লুকিং এবং সিটিং পজিশন। আমার এই বাইক নিয়ে অল্প কিছু জেলায় ঘুরা হইছে, ইচ্ছা আছে এইটা নিয়েই ৬৪ জেলা ভ্রমন এবং সুযোগ হইলে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে ভ্রমণের।
Bajaj Pulsar 150 Single Disc বাইকের কিছু ভাল দিক-
- লুকিং ।
- সিটিং পজিশন।
- মাইলেজ।
- স্পেয়ার পার্টস এর দাম কম।
- কম্ফোর্ট ।
Bajaj Pulsar 150 Single Disc বাইকের কিছু খারাপ দিক-
- হেডলাইট এর আলো কম।
- লং টাইম চলালে সাইন্ড নষ্ট হয়ে যায়।
- ভাইব্রেশন।
আমার বাইকের সাইলেন্সরটা মডিফাই করেছি একটু বেটার সাউন্ডের জন্য, যখন ৬০/৭০ স্পিডে বাইক চলে তখন সেই মৃদু সাউন্ড টা শুনতে খুব ভাললাগে। পরিশেষে বলা যায়, দাম,মাইলেজ এবং মেন্টিনেন্স কষ্ট সবকিছু মিলিয়ে এটা একটা স্টান্ডার্ড বাইক।যেকোন বয়সের যে কেউ এই বাইকটা নিতে পারবেন। আশা করি আপনাকে নিরাশ হতে হবে না। সবাই সাবধানে বাইক চালাবো এবং সেফটি মেইন্টেন করবো। আল্লাহ হাফেজ। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মো: সানজেদুর রহমান শুভ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।