Bajaj Avenger 150 40,000+ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ -সাইদ

This page was last updated on 31-Jul-2024 05:49pm , By Shuvo Bangla

আমি আবু সাঈদ চৌধুরী । আজ আমি আমার বাইক Bajaj Avenger 150 40000+ কিলোমিটার রাইড এর অভিজ্ঞতা নিয়ে আপনাদের কিছু শেয়ার করবো । আমি ঢাকা পশ্চিম নাখালপাড়া থাকি । পেশায় একজন ব্যাবসায়ী ।

Bajaj Avenger 150 40,000+ কিমি মালিকানা রিভিউ

Bajaj Avenger 150 40,000+ কিমি

আমার জীবনের প্রথম বাইক TVS Apache RTR 150 মডেল ২০১৫। বাইকের প্রতি দুর্বলতা ছিল অনেক কিন্তু চালতে পারতাম না । ২০১৫ সালে বিশেষ করনে বাইক ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। আমার ছোটবেলার বন্ধু মাহাবুবুর রহমান ও হিমেল আমাকে চালানো শিখায় ও সাহস দেয় যার কারনে আমার বাইক চালানো শেখা হয়।

প্রায় ২ বছর আমি TVS Apache RTR 150 বাইকটি ব্যবহার করি। বাইকের প্রতি আমার ভালবাসা আরও বাড়তে থাকে। TVS Apache RTR 150 বাইকটা  বিক্রি করে Suzuki Gixxer আথবা Bajaj v15 এই ২ টি বাইকের মধ্যে কোনটা নিব ভাবছি ।   যখন জানতে পারি বাংলাদেশে Bajaj Avenger 150 বাইক আসতেছে তখন আমি আমার বাইক বিক্রি করে দিয়ে Bajaj Avenger 150 বাইকটি ক্রয় করি ২০১৭ সালে।   

Also Read: Bajaj Avenger Street 150 First Impression By Team BikeBD

বাইকিং এর প্রতি অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। আসলে বাইকিং ভালোবাসার কারন বলে বুঝানো যাবে না । বাইকের মাধ্যমে স্বাধীন ভাবে যে কোন জায়গাতে যাওয়া যায় এবং সময় কম লাগে, এটা আমার খুব ভালো লাগে ।   Bajaj Avenger 150 বাইকটি আমি ১,৯৯,৯০০/- টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি । বাইকটি আমি বাজাজ এর অথোরাইজ ডিলার পয়েন্ট Bajaj collection মোহাম্মদপুর এর শো রুম থেকে ক্রয় করি । নতুন কিছু কেনার অনুভুতি বলে বোঝানো কঠিন। অসাধারন এক অনুভুতি ছিল সেদিন। বাইক কেনার সময় আমার বন্ধুরা সাথে ছিল।

যখন শোরুমে থেকে প্রথম বাইক স্টার্ট দেই তখন মনে অন্য রকম একটা আনন্দের অনুভূতি আসলো যা সত্যি অসাধারন । বাইকটা নিয়ে রাস্তায় বের হলাম মানুষ কৌতুহলী হয়ে দেখছে আর বিভিন্ন প্রশ্ন করছে। বেশ ভালোই লাগতে ছিল বাইকের বিভিন্ন দিক গুলো নিয়ে সবার সাথে আলাপ আলোচনা করতে।   প্রথমত এর মাসকুলার লুকস, এর হেডলাইট গোল হওয়ায় ক্লাসিক একটি লুক আমাকে মুগ্ধ করেছে । এর সিট এর কথা এক কথায় অসাধারণ।   বাইকটিতে আছে ৫ টি গিয়ার, ১৫০ সিসির একটি  ইঞ্জিন, ডিক্স ব্রেক, টিউবলেস মোটা চাকা ,নতুন লুকস ঠিক যেমনটা আমার দরকার এবং পছন্দ ছিল ।

বাইকটিতে একটা অসাধারন অনুভুতি পাই। প্রতিদিন আমার কাছে বাইকটি নতুন এর মত মনে হয়। মনে হয় যে আজকেই বাইকটি কিনে আনলাম ।

Bajaj Avenger 150 40,000+ কিমি

আমার এই ৪০০০০+ কিলোমিটার রাইড এর মধ্যে বাইকে তেমন বড় কোন সমস্যা হয়নি, ক্লাস প্লেট, চেইন স্পোকেট ছাড়া তেমন কিছু এখন পর্যন্ত পরিবর্তন করতে হয়নি । আমি নিয়মিত  বাইকের সার্ভিস করাই ও ইন্জিন অয়েল সঠিক সময়ে পরিবর্তন করি ।   ব্রেকিং পিরিয়ডে ৪০০০-৫০০০ RPM এ ৪৫-৫৫ কিলোমিটার স্পীডে ব্রেকিং মেইনটেইন করে চালাতাম তখন ৩৫+ কিলোমিটার প্রতি লিটারে মাইলেজ পাই ।   ব্রেকিং প্রিয়োড শেষ করার পরে ৬০০০-৭০০০ আরপিএম এ ৫০-৭০ কিলোমিটার গতিতে ৩৮+ মাইলেজ পাচ্ছি এভারেজ। এই বাইকে মাইলেজ নিয়ে আমার কোন প্রকার অভিযোগ নেই। বেশ ভালো একটা মাইলেজ পাচ্ছি।  বাসায় এসে আমি প্রতিদিন রাতে বাইকটি ভালো ভাবে মুছে রাখি। 

Also Read: Uttara Motors Bangladesh Price List

প্রতিদিন সকালে বাইক  স্টার্ট দিয়ে ২-৩ মিনিট এমনি চালু করে রাখি। প্রতি ১০ দিন পরপর বাইক ওয়াশ করি তবে বৃষ্টির দিনের হিসেব ভিন্ন। প্রতি সপ্তাহে চাকার হাওয়ার প্রেশার চেক করি। মাসে একবার চেইন পরিষ্কার ও লুব ব্যবহার করি।   প্রথম ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করেছি ৩৯০ কিলোমিটার হবার পর। এরপর ২য় ইঞ্জিন অয়েল ৮০০ কিলোমিটারে পরিবর্তন করি এবং ৩য় ইঞ্জিন ওয়েল ১৭৫০ কিলোমিটারে পরিবর্তন করেছি। বাজাজ এর রিকমেন্ডেট ২০W৫০ গ্রেডের মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি। প্রতিটি ইঞ্জিন অয়েল ১০০০ কিলোমিটার রাইড করার পরে পরিবর্তন করি ।   বাইকের স্টক কোন কিছু পরিবর্তন করিনি । মডিফাইর এর মধ্যে শুধুমাত্র শাড়ি গার্ড, পা দানি ও সাইলেন্সার গার্ড লাগিয়েছি। কিছু স্টিকার মডিফাই করেছি এবং তাতে বাইকের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

আমি বেশি স্পিডে বাইক চালাই না তারপরও এখন পর্যন্ত ১১৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা স্পিড তুলেছি ।   Bajaj Avenger 150 বাইকটিরকিছুভালোদিক- 

  • ক্লাসিক লুকস
  • গোল হেডলাইট
  • লম্বা সিট এবং কম্ফোর্ট সিটিং পজিশন

  Bajaj Avenger 150 বাইকটিরকিছু  খারাপদিক-

  • সাসপেনসনে কট কট শব্দ করা। যদিও এখন সার্ভিস সেন্টার থেকে ঠিক করে দিয়েছে
  • রং এর কোয়ালিটি আর একটু ভালো হতে পারত।
  • পিছনে ডিস্ক ব্রেক থাকলে আরও ভালো হতো ।

  বাইক নিয়ে অনেক লং ট্যুরে করেছি । তবে কিছুদিন এর মধ্যে টেকনাফে থেকে তেঁতুলিয়া  যাওয়ার ইচ্ছা আছে ।

Bajaj Avenger 150 40,000+ কিমি

এখন পর্যন্ত বাইকটি আমি ৪০,০০০+ কিলোমিটার চালিয়েছি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে । এর ব্রেকিং ও কমফোর্ট আমার বেশ ভালো লেগেছে । ১৫০ সিসি সেগমেন্টের ক্রুজার বাইকের মধ্যে Bajaj Avenger 150 কে মাইলেজ এর বস বলা যায়। বাংলাদেশ বাজাজ কম্পানি কিছু কিছু ছোট খাটো বিষয়ে আর একটু ভালো করতে পারতো।   শখ ও বাইক ব্যবহার করে অভস্ত্য হয়ে গেছি। বাইক নিয়ে স্বাধীন ভাবে সব জায়গাতে যাওয়া যায় কোন রকম ঝামেলা ছাড়া । সবশেষ আমার মতে পয়সা উশুল বাইক হচ্ছে এই Bajaj Avenger 150 বাইক।   কম্ফোর্ট বেশি সাথে ভালো মাইলেজ এবং স্টাইল এর মধ্যে ক্রুজার বাইক কিনতে চাইলে Bajaj Avenger 150 হবে আপনার জন্য পার্ফেক্ট একটি বাইক । ধন্যবাদ।   

লিখেছেনঃ আবু সাঈদ চৌধুরী   

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।