রানার টার্বো মালিকানা রিভিউ লিখেছেন তায়েফ মাযাহারুল
This page was last updated on 07-Jul-2024 08:44am , By Saleh Bangla
বিদেশি ব্রান্ডের একচেটিয়া বিজনেস অনেকটাই কমে এসেছে আমাদের দেশে কিছু ব্রান্ড এর উৎপাদন শুরু হওয়াতে এর ভেতর রানার , ওয়ালটন এর নাম প্রথমেই আসে । আজকে আমি রানার টার্বো ১২৫ সিসি এর সম্পর্কে আমার ৮ মাসের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। আমি একজন শখের বাইকার , নিয়মিত চালানো হতো Yamaha fz-s এর প্রথম মডেল টি , ২০১৭ এর এপ্রিলে আমি চাকুরিতে জয়েন করলে সেখান থেকে রেগুলার ব্যবহার এর জন্য একটি রানার টার্বো ১২৫ সিসি দেওয়া হয়। হঠাত করে মোটা চাকা থেকে চিকন চাকায় সুইচ হওয়াতে প্রথমে একটু অসুবিধা হয় পরে কিছুদিন চালানোর পর মোটামুটি অভ্যস্ত হয়ে যাই .
আগে দর্শনধারী , পরে গুনবিচারি 125cc বাইক হিসেবে টার্বো বাইকটি বাজারে অন্য 125cc এর গুলোর থেকে কম নয়(দয়া করে ৬ লক্ষ টাকার KTM এর সাথে তুলনা দিয়ে লজ্জাদিবেন না) একটু কার্ভই বডি শেইপ। এছাড়া এর ডিজিটাল স্পিডোমিটার বাইকটিকে আরো সুন্দর করে তুলেছে ব্যক্তিগত ভাবে আমার রানার এর সবগুলা বাইক এর থেকে এটাই দেখতে ভালো লাগে।
রানার টার্বো বাইকটি আমি টোটাল চালাই ৯ হাজার কিলোর কাছাকাছি। এঞ্জিন অয়েল ইউজ করেছি havoline 20w-50 গ্রেডের মিনারেল এবং শেষ ৪ মাস ইউজ করেছি OWS এর 5w-40 গ্রেড এর সিন্থেটিক। পারফমেন্স : পারফমেন্স এ বাইকটির প্রাইস রেঞ্জ এর ভেতর সেরা বাইক বলবো , কোন ভাবেই এটি আমাকে হতাশ করেনি , থ্রটল রেসপন্স অনেক ভালো
এই বাইকটির এটির Max power (HP) with rpm: 8.4Kw @ 8500 rpm এবং Max torque: 11.0 Nm @ 7000 rpm এবং ৫ স্পিড ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন , সেলফ এবং কিক দুই ভাবেই বাইকটি স্টার্ট করা যায়। রানার টার্বো ১২৫ সিসি ফুয়েল ট্যাংক এর ধারক্ষমতা হলো ১৫ লিটার এবং এর ভেতর রিজার্ভ এ থাকে এক লিটার বাইকটি আমার অভিজ্ঞতায় পেট্রোলে এ চালিয়ে ভাল আউটপুট পেয়েছি যা অকটেন এ পাইনি ।
অকটেনে কেমন যেন ভার হয়ে থাকে পেট্রোল নিলে সবসময় বাংলা মোটর সাকুরা বার এর পাশের থেকে নিয়েছি। এটির টপ স্পিড পেয়েছি ১২০ এবং এটি একবার ই সেটি উত্তরা এয়ারপোর্ট রোড এ বাইকে তখন পেট্রোল ছিলো এবং এঞ্জিন অয়েল সিন্থেটিক ছিল as I said বাইকটির ইঞ্জিন থেকে পেট্রোল এর মাধ্যমেই ভালো আউটপুট পাওয়া সম্ভব। এছাড়া ৩০০ ফিট রোডে সব সময় ইজিলি ১১৪-১১৫ পেয়েছি উইথ পিলিয়ন যদি ১২৫ সিসির বাইক থেকে ১২০kmph অবিশ্বাস্য মনে হয়
তবে একবার রানার টারবো সম্পর্কে বাইক বিডি এর রিভিউ দেখতে পারেন। তবে ১২৯ কেজি ওজনের হাল্কা বাইকে এত স্পিড তোলার সাহস আর দ্বিতীয় বার করিনি বাইকটির সাসপেনশন এভারেজ , তবে কেও কখনো কমপ্লেইন করেনি পিলিয়ন হিসেবে। মাইলেজ সিটি তে ৪২-৪৪ এবং হাইওয়েতে ৪৭-৪৯ পেয়েছি মোটামুটি ১২৫ সিসি এর বাইক হিসেবে মাইলেজ আর একটু হলে ভালো হতো কিন্তু পারফর্মেন্স এর খাতিরে এতটুকু করাই যায় চাঁদেও কলঙ্ক থাকে তাই আসি কি কি সমস্যা ফেস করছি , তবে তা খুবই সামান্য
১।কয়েকবার স্পিডমিটার রিডিং অফ হয়ে আবার নিজে থেকে ঠিক হয়ে গেছিলো ২।পাস লাইট কাজ করা বন্ধ করে দেয় ৩। হর্ন মাঝে মাঝে একটা বাজে হাই আর পি এম এ রেভ করে সুইচ চাপলে দুইটা বাজে ৪। লাইট টা আরো একটু উজ্জ্বল হওয়া দরকার ছিলো মোটামুটি সমস্যা গুলো ইলেক্ট্রিকাল সাইট এ তবে আমি কোম্পনির দোষ দিবো না কারন আমি বাইকটি প্রতিদিন হাই প্রেশার এর ওয়াশার দিয়ে ওয়াস করতাম নিয়মিত পানির কারনেও এটি হতে পারে।
ব্রেকিং ও হ্যান্ডেলিং : বাইকটির সামনে ডিস্ক ও পেছনে ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে টায়ার(Front)2.75-18. Size: (Rear)90/90-18. যাদের মোটা চাকা চালিয়ে অভ্যাস তাদের কাছে প্রথমে একটু মানিয়ে নিতে সমস্যা হলেও আশাকরি রেগুলার ইউজ এ ঠিক হয়ে যাবে যেমনটি আমার হয়েছিলো।
ওভারঅল বাইকটির হ্যান্ডেলিং বাইকটির মতই চমৎকার সবশেষে বলবো ১ লক্ষ ২২ হাজার এর ভেতর এবং আমাদের দেশীয় ইন্ডাস্ট্রি এর বাইকগুলোর মধ্যে রানার টার্বো ১২৫ বাইকটি একটি অল-ইন ওয়ান বাইক বলে আমার কাছে মনে হয়েছে সঠিক মেইন্টেনেন্স এর মাধ্যমে বাইকটি থেকে ভালো এক্সপিরিয়েন্স পাওয়া সম্ভব আমার ৮/৯ মাসের অভিজ্ঞতায় বাইকটি কখনো আমাকে হতাশ করেনি । আর পার্টস আমি কখনো বাইরে থেকে কিনি নাই যা কিনছি তাদের সার্ভিস সেন্টার থেকে ওখানে সবই পাওয়া যায়। আশা করি রিভিউটি আপনাদের ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।
লিখেছেনঃ তায়েফ মাযাহারুল